স্যার আর্থার ইগনাশিয়াস কোনান ডয়েল। সকলে স্যার আর্থার কোনান ডয়েল হিসেবেই চেনেন তাকে। বিশ্ববিখ্যাত গোয়েন্দা শার্লক হোমসের জনক। মূলত তিনি ছিলেন একজন চিকিৎসক। তার রচিত আ স্টাডি ইন স্কারলেট প্রকাশিত হয় ১৮৮৭ সালে। শার্লক হোমস ও ডক্টর ওয়াটসন নামক অমর দুই চরিত্র এই বইতেই পাঠকদের সামনে উপস্থিত হয়। জনপ্রিয় গোয়েন্দা শার্লককে নিয়ে চারটি বড় উপন্যাস ও পঞ্চাশটির মতো ছোট গল্প লেখেন এই সাহিত্যিক। ক্রাইম ফিকশনের দিকপাল হিসেবে মানা হয়ে থাকে স্যার আর্থারকে।
১৮৫৯ সালের ২২ মে স্কটল্যান্ডের এডিনবরায় তার জন্ম, মৃত্যু ১৯৩০ সালের ৭ জুলাই। বিখ্যাত এই লেখকের মজাদার কিছু ঘটনা নিয়েই আজকের প্রিয়লেখার আয়োজন।
হারিয়ে যাওয়া উপন্যাস
স্যার আর্থারের লেখা প্রথম উপন্যাসটি ছিল ২৩ বছর বয়সে। দূর্ভাগ্যজনকভাবে, প্রকাশকের হাতে পৌছনোর আগেই পাণ্ডুলিপিটি হারিয়ে যায়। স্মৃতির ভরসাতে আবার নতুন করে লিখতে হয় তাকে।
ক্রিকেটার সাহিত্যিক!
অনেকেই হয়তো জানেন না, স্যার আর্থার ভালো ক্রিকেট খেলতে পারতেন। অমর চরিত্র পিটার প্যানের জনক জেএম ব্যারির সাথে একই দলে ক্রিকেট খেলতেন তিনি। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান মাঝে মাঝে বোলিংও করতেন।
গোলকিপার সাহিত্যিক!
শুধুমাত্র ক্রিকেট নয়, পোর্টস্মাউথ এফসি দলে এসি স্মিথ ছদ্মনামে ফুটবলও খেলেছেন তিনি। তবে গোলপোস্ট রক্ষার দায়িত্বে, অর্থাৎ গোলকিপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতেন স্যার আর্থার।
ওজন সমস্যা
অতিরিক্ত ওজনের কারণে বোয়ের যুদ্ধে অংশ নিতে পারেন নি এই সাহিত্যিক। পরবর্তীতে জাহাজের ডাক্তার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন এবং জাহাজে চড়ে আফ্রিকা যান।
রূপকথায় বিশ্বাসী
চমকে উঠতে পারেন, তবে এটা সত্য যে রূপকথায় বিশ্বাস করতেন স্যার আর্থার কোনান ডয়েল। এমনকি রূপকথার ফেইরিদের সত্যতা রয়েছে, এটা প্রমাণ করতে লক্ষ লক্ষ ডলার খরচ করতেও রাজী ছিলেন তিনি। The Coming Of The Fairies নামক বইটির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এমনটা বলেছিলেন। এই বইতে দেখানো হয়েছে ফেইরিদের দ্বারা একটি মেয়ে বেষ্টিত হয়ে আছে (যদিও ছবিটি ছিল একটি মিথ্যে কৌশল। সত্যতার লেশমাত্র ছিল না)
বন্ধু যখন শত্রু
বিখ্যাত ম্যাজিশিয়ান হ্যারি হুডিনির সাথে বেশ হৃদ্যতা ছিল স্যার আর্থারের। পরবর্তীতে স্পিরিচুয়ালিজমের ওপর একটি বাকবিতণ্ডায় দুজনের মধ্যে বৈরিতা জন্মায় (দায়টা স্যার আর্থারেরই বেশি ছিল)
নিজেই যখন গোয়েন্দা
নিজের সৃষ্ট অমর চরিত্র শার্লকের মতোই রহস্য সমাধান করতেন বাস্তব জীবনে। গ্লাসগোর ধনী বৃদ্ধা ম্যারিওন গিলক্রিস্টের মৃত্যু রহস্য সমাধান করেন স্যার আর্থার। বইয়ের চরিত্রের মতোই রহস্য সমাধানে একই কৌশন অবলম্বন করেন তিনি।
ডাইনোসরদের ফিরিয়ে এনেছিলেন তিনি
সারা দুনিয়া যখন ডাইনোসরদের কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিল, তখনই The Lost World বইটি লিখে রীতিমতো সাড়া ফেলে দিয়েছিলেন বরেণ্য এই সাহিত্যিক। পরবর্তীতে তার এই উপন্যাস থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে কিং কং ও জুরাসিক পার্ক নামক দুটি বই রচিত হয়।
তার শেষ শব্দ
নিজের বাগানে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই সাহিত্যিক। স্ত্রীকে বলা “You are wonderful” শব্দ তিনটেই ছিল তার মুখ নিঃসৃত শেষ শব্দগুচ্ছ।
(ফিচারটি তৈরি করতে সাহায্য নেয়া হয়েছে এই সাইটের)