খুনের কারণে বন্ধ হয়েছিল যে ক্রিকেট ম্যাচ – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ক্রিকেট / খুনের কারণে বন্ধ হয়েছিল যে ক্রিকেট ম্যাচ

খুনের কারণে বন্ধ হয়েছিল যে ক্রিকেট ম্যাচ

বৃষ্টির কারণে, কিংবা আলোকস্বল্পতার কারণে, কিংবা খেলার অযোগ্য আউটফিল্ডের কারণে ক্রিকেট ম্যাচ বন্ধ হতে দেখা যায় প্রায়শই। কিন্তু খুনের কারণে ম্যাচ বন্ধ হতে শুনেছেন কখনো? ক্রিকেট ইতিহাসের দুর্লভতম এই ঘটনার গল্পই আজ আপনাদের শোনাবো প্রিয়লেখার পাতায়।

৩১ অক্টোবর, ১৯৮৪

 

শিয়ালকোটে পাকিস্তান-ভারত ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ। আগের দিন, ৩০ অক্টোবর সন্ধ্যায় সুনীল গাভাস্কারের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল এসে উঠল লাহোর থেকেখুনের কারণে বন্ধ হয়েছিল যে ক্রিকেট ম্যাচ ঘণ্টা দুয়েকের দূরত্বে শিয়ালকোটে নবনির্মিত হোটেলে। ভারতীয় দল ভাগ্যবান ছিল যে শিয়ালকোটে এসে তারা হোটেলে উঠতে পেরেছিল। ১৯৮৪’র সেই সিরিজের আগে শিয়ালকোটে অতিথি দলগুলোর জন্য কোন হোটেলের ব্যবস্থাই ছিল না!

শিয়ালকোটের তখনকার ডেপুটি কমিশনার ইসমাইল কোরেশীর তা ভালোই মনে আছে। “শিয়ালকোটে খেলা হলেও আমরা অতিথি দলকে সাধারণত লাহোরেই রাখতাম। খেলার দিন ভোর চারটায় আমরা তাদেরকে ডেকে দিতাম, তারপর দুই ঘণ্টা ভ্রমণ করে শিয়ালকোট নিয়ে যেতাম, আবার খেলা শেষে লাহোর নিয়ে আসতাম”। তখনকার খেলোয়াড়েরা যে এতে বিন্দুমাত্রও অভিযোগ করতেন না, এটা মনে করে এখন হাসিই পায় কোরেশীর। “এখনকার ক্রিকেটে এটা একেবারেই অসম্ভব”- কোরেশীর সোজাসাপ্টা স্বীকারোক্তি।

ভারতীয় দলের সাথে বিশাল সাংবাদিক বহর ছিল, কিন্তু নতুন হোটেলে সবাইকে জায়গা দেয়ার মত যথেষ্ট কক্ষ ছিল না। কোরেশী তাই শিয়ালকোটের অভিজাত বাসিন্দাদের আহবান জানালেন ভারতীয় অতিথিদের আপ্যায়ন করার জন্য। “আমার মনে পড়ে এখনো, আনন্দের সাথেই তারা আপ্যায়ন করেছিলেন। তারা আমাকে চিন্তা করতে বারণ করেছিল। বলেছিল, অতিথিদের আপ্যায়নে কোন ত্রুটি হবেনা। তারা বুঝতে পেরেছিল, ভারতীয় অতিথিদের সঠিকভাবে আপ্যায়ন করা আমাদের শহরের জন্য খুব বড় ও গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়”।

কিন্তু মাঠের বাইরের এই সম্প্রীতি মাঠে খুব একটা বজায় ছিল না। প্রথম ওয়ানডেতে তো বটেই, আগের দুইটি টেস্টেও জয়ের মুখ দেখেনি ভারত। লাহোরে প্রথম টেস্টের পর সফরকারী অধিনায়ক গাভাস্কার আম্পায়ারিং নিয়ে তীর্যক মন্তব্য করেছিলেন, “পাকিস্তানি আম্পায়ারদের স্বাগতিকদের সুবিধা দেয়ার সর্বোচ্চ চেষ্টা সত্ত্বেও আমরা টেস্টটা ড্র করতে পেরেছি, এবং এটা অবিশ্বাস্য! আমরা এই সফরে কিছু ক্লোজ সিদ্ধান্ত আশা করেছিলাম, কিন্তু লাহোর টেস্টে যেটা হল, সেটা সম্পূর্ণ পূর্বপরিকল্পিত”।

পাকিস্তান অধিনায়ক জহির আব্বাস অবশ্য গাভাস্কারের এমন মন্তব্যের পেছনের ‘কারণ’টাও জানিয়ে দিয়েছিলেন, “পরিষ্কারভাবেই সুনীল এখানে কৌশলের আশ্রয় নিচ্ছে, যাতে করে সামনের খেলাগুলোর সিদ্ধান্ত নিজেদের পক্ষে নিতে পারে”।

তখনো পর্যন্ত সফরে জয়হীন থাকা ভারত শিয়ালকোটের জিন্নাহ স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নামল। ইনজুরির কারণে ম্যাচটা ড্রেসিংরুমে দর্শক সেজেই দেখছিলেন গাভাস্কার, অধিনায়কত্বের দায়িত্ব বর্তালো মহিন্দর অমরনাথের কাঁধে। শুরুতে দুই উইকেট হারালেও সফরে তখন পর্যন্ত নিজেদের সেরা খেলাটাই দিচ্ছিলেন ভারতীয় ব্যাটসম্যানেরা। মদন লালের ভাষায়, “আমরা খুব ভালো ব্যাট করছিলাম ওইদিন, বিশেষ করে দিলীপ ভেংসরকার ও সন্দ্বীপ পাতিল। উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য খুব ভালো ছিল, আমাদের ব্যাটসম্যানদের উইকেটের সুবিধা নিতে দেখে ভালো লাগছিল”।

ইন্দিরা গান্ধী ‘র উপর হামলা

ভেংসরকার ও পাতিল মিল ১৪৩ রানের জুটি গড়েছিলেন, কিন্তু সেসব ছাপিয়ে ইসমাইল কোরেশীর মাথায় তখন অন্য চিন্তা। “স্টেডিয়ামে বসে খেলা দেখছিলাম, হঠাৎই সাড়ে দশটার দিকে পাঞ্জাবের চীফ সেক্রেটারির ফোন এল আমার কাছে। ফোনে যা শুনলাম, তার জন্য একেবারেই প্রস্তুত ছিলাম না আমি। আমাকে বলা হল, দিল্লীতে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী কে গুলি করা হয়েছে, এবং তিনি মারাত্মকভাবে আহত। পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জিয়া-উল-হক তৎক্ষণাৎ খেলা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন বলেও জানানো হল”।

“আমি নির্বাক বসে রইলাম কিছুক্ষণ। এই নির্দেশ পালন কিভাবে সম্ভব! মাঠে ভারত-পাকিস্তান খেলা হচ্ছে, ২৫ হাজার দর্শক প্রায় প্রতিটা বলেই দলের সমর্থনে স্লোগান দিয়ে যাচ্ছে। ইনিংসের মাঝপথে কিভাবে আমি খেলা থামিয়ে দিয়ে সবাইকে চলে যেতে বলি! এটা আমার নিয়ন্ত্রণের বাইরে ছিল, তাই কিছুক্ষণের জন্য আমি খেলা চালিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম”।

উপমহাদেশে শীতের দিনে যখন ক্রিকেট হয়, গরমের দিনের তুলনায় খেলা শেষ করার জন্য তখন কম দিনের আলো পাওয়া যায়। শিয়ালকোটে তখন ফ্লাডলাইটের ব্যবস্থাও ছিল না, সিরিজের ওয়ানডে ম্যাচগুলো তাই দিনের আলো থাকতে থাকতেই শেষ করার জন্য ৪০ ওভারে নামিয়ে আনা হয়েছিল। নির্ধারিত ৪০ ওভার শেষে ভারতের সংগ্রহ দাঁড়াল ৩ উইকেটে ২১০, তখনকার প্রেক্ষাপটে যা যথেষ্ট ভালো স্কোর। ভেংসরকার ১০২ বলে ৯৪ করে অপরাজিত ছিলেন, এখনকার ক্রিকেটেও যা ভালো স্ট্রাইক রেট বলে বিবেচিত হবে।

ইনিংস বিরতির সময় কোরেশীর মনে হল, এই সময়টাই উপযুক্ত খেলা বন্ধ করার জন্য। তিনি ভারতীয় ড্রেসিংরুমে গিয়ে অধিনায়ক গাভাস্কার ও ম্যানেজার রাজ সিং দুঙ্গারপুরকে এক সাইডে ডেকে নিয়ে গিয়ে খবরটা জানালেন। “আমার স্পষ্ট মনে আছে, গাভাস্কার ভয়ানক ধাক্কা খেয়েছিল খবরটা শুনে। আমি তাঁকে প্রেসিডেন্টের নির্দেশের কথা জানাইনি, শুধু জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনি কি করতে চান এই অবস্থায়। তিনি খেলা বন্ধ করে মাঠ ত্যাগের জন্য প্রস্তুত ছিলেন। আমি তাঁকে জানালাম, সব ব্যবস্থা করা আছে, লাহোর যাত্রার জন্য গাড়ি দাঁড়ানো আছে বাইরে”।

ইসমাইল কোরেশী

শিয়ালকোট বিভাগীয় ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের জেনারেল সেক্রেটারি মিয়ান শাকুরের সেদিনের অনেক স্মৃতিই মনে আছে। ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে শিয়ালকোটের ক্রিকেটকে কাছ থেকে দেখে যাওয়া শাকুর জানিয়েছিলেন, “খবরটা শুনে ভেংসরকার ও শাস্ত্রী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েছিল”।

ইনিংস বিরতি শেষ হতে হতে ভারতীয় দল মাঠ ত্যাগ করেছিল। কিন্তু তখনো একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজ বাকি ছিল, দর্শকদের জানানো। কোরেশী যেহেতু সেদিনের ম্যাচের দায়িত্বে ছিলেন, তাই এই কাজটাও তাকেই করতে হতো। দাঙ্গা পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রেখে, ও দর্শক প্রতিক্রিয়া কেমন হতে পারে তা না জেনেই তিনি ঘোষণা দিলেন, “ইন্দিরা গান্ধীকে গুলি করা হয়েছে, খেলা তাই বাতিল ঘোষণা করা হল”।

পাকিস্তানিদের লজ্জাজনক প্রতিক্রিয়া

“যেকোনো রকম দর্শক প্রতিক্রিয়া আসতে পারত। কিন্তু আমি অবাক বিস্ময়ে দেখলাম, দর্শকেরা সব হাততালি দিচ্ছেন। তারপর ধীরে সুস্থে তারা স্টেডিয়াম ত্যাগ করলেন। ইন্দিরা গান্ধী পাকিস্তানে মোটেও জনপ্রিয় ছিলেন না ঠিকই, কিন্তু দর্শকদের এমন প্রতিক্রিয়া আমি একদমই অনুমান করতে পারিনি। আমাদের ভাগ্য ভালো ছিল, এই ঘটনার আগেই ভারতীয় সাংবাদিকরা সব মাঠ ত্যাগ করেছিলেন। তখনকার ইন্দো-পাক সম্পর্ক যে অবস্থায় ছিল, তাতে করে এটা হত আগুনে ঘি ঢালার মত”।

শাকুরের মনেও একই স্মৃতি, “এটা অবিশ্বাস্য ছিল। আমরা তাদের জানাচ্ছিলাম পাকিস্তান ব্যাট করতে নামবে না, টিকিটের কোন টাকা ফেরত দেয়া হবে না, সবচেয়ে বড় কথা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নিহত হয়েছেন! তারপরেও দর্শকেরা এমনভাবে আচরণ করলেন, যেন কিছুই হয়নি! এটা আসলেই লজ্জাজনক ছিল”।

তবে কোরেশী এত তাড়াতাড়ি দর্শকদের সম্পর্কে কোন সিদ্ধান্তে পৌঁছে যেতে রাজি নন। “এটা ভুলে গেলে চলবে না শিয়ালকোট ভারতীয় বর্ডারের খুব কাছাকাছি একটা জায়গা। ওখানে বসবাসরতদের জীবন, অভিজ্ঞতা আমাদের থেকে অনেক অনেক আলাদা। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ এ তারা অনেক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে,সীমান্তে ভারতীয়দের অনৈতিক আগ্রাসন -গবাদিপশু থেকে শুরু করে ধন-সম্পদ, সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের। তাদের ভেতরের জমে থাকা আবেগটাই বেড়িয়ে এসেছে, আর জমে থাকা আবেগ এরকমই হয়”।

ভারতে দাঙ্গা

ভারতীয় পেসার মদন লাল বলেছিলেন পরে, “আমরা সবাই ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু আমার ভয়টা ছিল আরেকটু বেশি, কারণ আমি দিল্লীর ছেলে। যখন দিল্লী এয়ারপোর্টে নামলাম, একটা মানুষকেও দেখতে পাইনি”। মদন লালের আশঙ্কা মোটেও অমূলক ছিল না। আকস্মিক এই ঘটনার পরেই গোটা ভারত জুড়ে ভয়াবহ দাঙ্গা বেঁধে যায়, প্রায় ৮ হাজার মানুষের মৃত্যু হয় দাঙ্গায়। আর এই রক্তপাতের কেন্দ্রবিন্দু ছিল দিল্লী।

তবে ইসমাইল কোরেশীর প্রত্যুৎপন্নমতিত্ত্বে সেদিন শিয়ালকোটে সম্ভাব্য গণ্ডগোল এড়ানো সম্ভব হয়েছিল। তার পুরষ্কারও তিনি পেয়েছিলেন, ১৯৮৭ বিশ্বকাপে পাকিস্তানের ভাগের ম্যাচগুলো আয়োজনের জন্য যে কমিটি গঠন করা হয়েছিল তাতে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল কোরেশীকে।

ক্রিকইনফো অবলম্বনে

বছরটা এমনিতেই খুব একটা ভালো যাচ্ছিল না শচীন টেন্ডুলকারের। বিশ্বকাপের বছর, অথচ মৌসুমের শুরুর দিকেই চেন্নাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৩৬ রানের দারুণ ইনিংস খেলতে গিয়ে পিঠের চোটে পরলেন। ব্যাথা নিয়েই ইংল্যান্ডে গেলেন বিশ্বকাপ খেলতে। আত্মজীবনিতে পরে লিখেছেন, “যতবার অনুশীলন করতে নামতাম, আমার পিঠ কেমন অসাড় হয়ে যেত। ঠিক হওয়ার জন্য একটা কুলিং পিরিয়ড লাগত আমার”।

About Sanjoy Basak Partha

Check Also

প্রসিধ কৃষ্ণা: নেট বোলার থেকে আইপিএল মাতানো তরুণের গল্প

প্রথমবার যখন শীর্ষ পর্যায়ের ক্রিকেটের স্বাদ পেলেন, প্রসিধ কৃষ্ণার বয়স তখন ১৯ বছর। ২০১৫ সালে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *