ফারিহা আর নাবিল দুজনই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগের একই ব্যাচের শিক্ষার্থী। শুরুতে দুজন খুব ভালো বন্ধু ছিল, কিন্তু কিছুদিন ধরে নাবিল খেয়াল করছে ফারিহার আচরণে কেমন যেন একটু পরিবর্তন এসেছে। আগের চেয়ে একটু বেশি মিশতে চাইছে, একটু বেশি সময় কাছে থাকতে চাইছে, সবকিছুতে একটু বেশি খোঁজ-খবর ও নিচ্ছে। ফারিহার এক বান্ধবীর সাথে এই বিষয়ে কথা বলতে গেলে সে নাবিলকে বলল, এগুলো আর কিছুই না, ফারিহা যে নাবিলের প্রেমে পড়েছে তারই লক্ষণ কেবল!
আমাদের মধ্যে একটি কমন ধারণা আছে যে বেশিরভাগ সময় ছেলেরাই প্রথম প্রেমে পড়ে এবং প্রেমের বহিঃপ্রকাশও প্রথম ছেলেরাই করে। কিন্তু এটা মোটেও সত্য নয়। প্রেমে মেয়েরাও পড়তে পারে, এবং ইনিয়ে বিনিয়ে প্রেমের কথা প্রকাশ করার চেষ্টাও করতে পারে। আপনাকে শুধু বুঝে নিতে হবে সেই ইশারাগুলো!
হঠাৎ করেই যত্ন-আত্তি করার প্রবণতা বেড়ে যাওয়া:
আগে হয়তো যেসব বিষয়ে পাত্তাই দিতনা, এখন সেই ছোট ছোট বিষয়গুলোও খেয়াল করতে শুরু করবে। শীতের দিনে গরম কাপড় গায়ে দিয়েছ কিনা, কাল খুব সকালে ক্লাস, ঘুম থেকে ডেকে দিতে হবে কিনা, ক্লাসের ফাঁকে ঠিকমত খাওয়া দাওয়া করেছ কিনা- এমন আরও হরেক রকমের আচরণ খেয়াল করলে বুঝবেন, মেয়েটি আপনার প্রতি দুর্বল।
চুপিচুপি বারবার তাকানো:
হয়তো ক্লাস করছেন, হঠাৎ করে মেয়েটির দিকে চোখ পরল। দেখবেন মেয়েটি আপনার দিকেই অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে! আপনি যেখানেই যান, মেয়েটি আশেপাশে থাকলে চুপিসারে বারবার আপনার দিকে তাকানোর চেষ্টা করবেই।
ব্যক্তিগত ঘটনা শেয়ার করা:
মেয়েরা সাধারণত তাদের ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনের কথা বাইরের কারোর কাছে প্রকাশ করতে চায় না। কিন্তু কোন মেয়ে আপনার উপর দুর্বল হয়ে পরলে খেয়াল করবেন মেয়েটি নিজে থেকেই তার ব্যক্তিগত ও পারিবারিক বিষয়াবলী আপনার সাথে শেয়ার করছে। মেয়েটি চাইবে আপনি তার কথা গুরুত্বসহকারে শুনুন, তার প্রতি সহানুভূতিশীল হোন।
বেশি বেশি সময় কাটাতে চাওয়া:
পছন্দের মানুষের সাথে বেশি সময় কাটাতে চাইবে এটাই স্বাভাবিক। যেকোনো উছিলায় হয়তো আপনার সাথে বেশি সময় কাটাতে চাইবে। ছুটির দিনে পড়া বোঝার নাম করে আপনার সাথে দেখা করা, কিংবা রাতে বাসায় পৌঁছে দিয়ে আসার নাম করে, যেভাবেই হোক আপনার সাথে একটু বেশি সময় কাটাতে সে চাইবেই।
আপনার জন্মদিন সম্পর্কে খুব উত্তেজিত থাকা:
প্রেমে পড়ার কিছুদিনের মধ্যেই যদি আপনার জন্মদিন থাকে, তাহলে দেখবেন জন্মদিনের বেশ আগে থেকেই মেয়েটির মধ্যে অন্যরকম একটা চাঞ্চল্য কাজ করবে। আপনার জন্মদিনটাকে বিশেষভাবে সাজিয়ে তোলার জন্য সম্ভাব্য সবরকম চেষ্টাই সে করবে।
অন্য মেয়েদের কথা শুনে ঈর্ষান্বিত হওয়া:
স্বাভাবিকভাবে প্রিয় মানুষটির মুখে অন্য কোন মেয়ের প্রশংসা শুনলে, কিংবা বারবার অন্য মেয়েদের নাম শুনতে থাকলে সে ঈর্ষান্বিত হবে। আকারে ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবে যেন আপনি তার সামনে অন্য মেয়েদের কথা বেশি না বলেন।
স্পর্শের জন্য ব্যাকুল থাকা:
ধরুন দুজনে পাশাপাশি হাঁটছেন, হুট করেই মেয়েটির হাত আপনার হাতে আলতো করে ছোঁয়া লাগল। আপনার হয়তো মনে হবে ভুলবশত লেগেছে, কিন্তু কখনো কখনো মেয়েরা ইচ্ছাকৃতভাবেও এমনটা করে থাকে। প্রিয় মানুষের একটু স্পর্শের জন্য তারা ব্যাকুল হয়ে থাকে। মেয়েটি হয়তো চাইছে আপনি তার হাত ধরে হাঁটুন, কিন্তু মুখে বলতে পারছে না, আবার নিজেও হাত ধরতে পারছেনা। তখন এরকম ছোট ছোট আনন্দের মুহূর্তই তাকে খুশি করে তুলতে পারে।
সময়ে অসময়ে এসএমএস/ফেসবুকে নক দেয়া:
প্রেমে পড়ার পর মেয়েটি সবসময় আপনার কথাই ভাববে, তাই এটাও খুব স্বাভাবিক যে কারণে অকারণে যেকোনো সময় সে আপনাকে মেসেজ দিতে চাইবে। কোন কথা ছাড়াই কি কর, কালকে কখন দেখা হবে এরকম অনেক অবান্তর প্রশ্ন করে মেসেজ দিলে বুঝবেন, মেয়েটি আপনার সাথে স্রেফ কথা বলার জন্যই এমন করছে।
আপনার পরিবারের প্রতি যত্নশীল হওয়া:
পরিবার প্রতিটা মানুষেরই সফট কর্ণার। মেয়েটা তাই আপনার পরিবারের মানুষগুলোর সম্পর্কে খোঁজ খবর নিবে নিয়মিত, আপনার ছোট ভাই বোনের জন্মদিনে উপহার দিতে চাইবে। এসব ছোট ছোট ইঙ্গিতেই আপনাকে বুঝে নিতে হবে, মেয়েটি আপনাকে পছন্দ করে।