বিকেল বেলা বাচ্চা নাস্তার আবদার করল, সাথে সাথে দোকান থেকে বার্গার, পিৎজা কিনে এনে হাতে ধরিয়ে দিলেন বাচ্চার। বাচ্চা হয়তো সাময়িক তৃপ্তি পেল, কিন্তু একইসাথে অনেক ধরণের শারীরিক সমস্যার পথেও এক ধাপ এগিয়ে গেল। টিফিনে কিংবা বিকালের নাস্তায় বাচ্চাকে এসব জাঙ্ক ফুড না খাইয়ে দৈনিক একটি করে আপেল খাওয়ানোর অভ্যাস করুন। শুধু বাচ্চাকে কেন, নিজেও দৈনিক একটি করে আপেল খাওয়ার অভ্যাস করুন। কারণ আপেলে যা পুষ্টিগুণ আছে, তা খুব কম ফলেই আছে। আজকের প্রিয়লেখার পাতায় থাকছে আপেলের তেমনি কিছু গুণাগুণ।
আপেল হল প্রাকৃতিক টুথপেস্ট
আপেলকে বলা হয় প্রাকৃতিক টুথপেস্ট। আপেল কামড় দেয়ার পর চিবানো শুরু করার পর মুখের ভেতর লালার সৃষ্টি হয়। এতে করে দাঁতের আনাচে কানাচে জমে থাকা ব্যাকটেরিয়া বেরিয়ে আসে। এ কারণে আপেলকে বলা হয় প্রাকৃতিক টুথপেস্ট।
হৃদপিণ্ড সুস্থ রাখে
আপেলের খোসার মধ্যে যে ফেনলিক উপাদান থাকে, তা রক্তনালিকা থেকে কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করে। ফলে হৃদপিণ্ডে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে ও হৃদপিণ্ডের জটিলতা কম হয়।
ক্যান্সার প্রতিরোধক
আপেল বেশ ভালো স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করতে পারে। আপেলে পেকটিন জাতীয় এক ধরণের উপাদান থাকে যা কোলনের ক্যান্সারের বিরুদ্ধে সহায়ক হতে পারে। এছাড়া লিভার ক্যান্সার ও ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধেও আপেলের ভূমিকা রয়েছে। আপেলে যে প্রচুর পরিমাণ ফ্ল্যাভোনল থাকে, তা অগ্ন্যাশয়ের ক্যান্সারের সম্ভাবনা কমায় প্রায় ২৩%। আপেলের মধ্যে যে পরিমাণ ফাইবার থাকে, তা মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে সাহায্য করে।
ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে
আপেলে প্রচুর পুষ্টিগুণ আছে। ক্ষুধা মেটানোর পাশাপাশি ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে, ফলে শরীরে অতিরিক্ত মেদ জমে না। এছাড়া প্রতিদিন ৩ টি করে আপেল খেলে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ডায়বেটিসের ঝুঁকি কমায়
নিয়মিত আপেলে খেলে ডায়বেটিসের ঝুঁকি ২৮% পর্যন্ত কমে যেতে পারে। আপেলে যে আঁশ থাকে, তা রক্তে শর্করার পরিমাণ সঠিক রাখতে সাহায্য করে।
কোলেস্টেরল কমাতে সাহায্য করে
আপেলে উপস্থিত আঁশ অন্ত্রের ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে, ফলে রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
আপেলে কুয়েরসেটিন নামে এক ধরণের অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে, যা মানুষের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।
হজম ক্ষমতা বাড়ায়
আপেলে উপস্থিত শর্করা খাদ্যনালীতে ধীরে ধীরে ভেঙ্গে হজম হয় বলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে। প্রতিদিন আপেল খেলে হজমে সহায়ক ব্যাকটেরিয়া উৎপন্ন হয় পেটে, ফলে হজম ক্ষমতা বাড়ে।
বাতের ব্যথা দূর করে
আপেলের ম্যালিক এসিড শরীরের ইউরিক এসিডকে নিষ্ক্রিয় করে রাখে, ফলে বাতের ব্যথার প্রকোপ কিছুটা হলেও কমে।
ফ্রি রেডিকেল দূর করে
আপেলের খোসায় কোয়ার্সিটিন নামক এক প্রকার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপস্থিত, যা শরীরে তৈরি হওয়া ফ্রি রেডিকেল দূর করে। আলঝেইমার্স ও পারকিনসিজম দূর করতেও সাহায্য করে এই কোয়ার্সিটিন।
হাড় শক্ত করে
আপেলে প্রচুর পরিমানে বোরন থাকে যা হাড় শক্ত করতে সাহায্য করে।