উপার্জন করতে চান কিন্তু শৃঙ্খলিত জীবন আপনার ভালো লাগে না? স্যুটেড বুটেড হয়ে ন’টা-পাঁচটা চাকরির জীবন ধীরে ধীরে অস্বস্তিকর হয়ে উঠছে? ঘরে বসেই আয় করার উপায় খুঁজছেন?
জেনে অবাক হবেন, এই লেখাটি আপনি যখন পড়ছেন, ঠিক একই সময়ে অনলাইনে শত শত ডলার কামিয়ে নিচ্ছে মানুষ ঘরে বসেই। তাহলে আর দেরি কেন? লেগে পড়ুন কাজে, হয়ে উঠুন স্বাবলম্বী। নিজের কর্মসংস্থান নিজেই তৈরি করে নিন, তৈরি করুন আরো মানুষের কর্মসংস্থান। প্রিয়লেখার পাতায় ঠিক এমনই কিছু টিপস দেয়া হবে আপনাদের, যার সাহায্যে ঘরে বসেই করতে পারবেন উপার্জন।
পিটিসি সাইট থেকে আয়
যদি শুধুমাত্র পকেটমানির জন্য আপনি কাজ খুঁজে থাকেন, তাহলে শুরু করবার জন্য পিটিসি সাইটগুলো হয়ে উঠতে পারে আদর্শ। ক্লিকের মাধ্যমে আপনি পেয়ে যেতে পারেন টাকা। এইজন্য আপনাকে ১০-৩০ সেকেন্ডের মাঝে অ্যাডভারটাইজমেন্ট পড়ে দেখতে হবে। প্রতি ক্লিকের মাধ্যমে আপনি পেয়ে যাবেন টাকা। এছাড়াও আরো অনেক সাইট আছে যেখানে বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশন করে টাকা আয় করতে পারেন। এখানে কোন টাকাপয়সা বা পুঁজি দরকার হয় না। এই লিংকে আপনাদের কিছু পিটিসি সাইটের উদাহরণ দেয়া হলো, যেখান থেকে টাকা উপার্জন করতে পারেন।
জিপিটি সাইট থেকে আয়
যদি পকেট মানি থেকে একটু বেশি পরিমাণে টাকা আপনার প্রয়োজন হয়, তাহলে জিপিটি সাইট থেকে আয় করতে পারেন। পেপ্যাল, চেক কিংবা ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে টাকা মেটানো হয়ে থাকে। কি করতে হবে? ছোট ছোট জরিপের কাজ নিরীক্ষণ, অনলাইনে ভিডিও দেখা, গেম খেলা কিংবা ছোটখাট আরো নানা ধরণের কাজ করে বেশ সহজেই টাকা উপার্জন করতে পারেন।
ক্যাপচা (Captcha) সমাধান করে উপার্জন করুন
যদি আপনার পঠন ক্ষমতা ও সে অনুযায়ী কীবোর্ডে প্রতিক্রিয়া ক্ষমতা ভালো হয়ে থাকে, মানিব্যাগে আরো কিছু টাকা পুরতে পারবেন। সে জন্য আপনাকে হতে হবে দক্ষ ক্যাপচা সমাধানকারী। এই কাজটি করবার জন্য আপনাকে একটি ছবির ক্যাপচা ইমেজ পড়তে হবে এবং সেখানে যে ক্যারেকটারগুলো দেয়া আছে, ঠিক একইভাবে টাইপ করতে হবে। যত দ্রুত কাজ করতে পারবেন, পকেটে টাকা আরো তত দ্রুত আসবে। প্রত্যেকটি ক্যাপচা সমাধানের জন্য আপনি ২ডলার আয় করতে পারবেন। সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে আয় আরো বাড়তে পারে।
জরিপ করে টাকা আয়
পাঁচ থেকে ত্রিশ মিনিটের মাঝে ছোট ছোট জরিপের কাজ করে আপনি টাকা ইনকাম করতে পারেন। তবে কতটুকু সময়ে করতে হবে, তা নির্ভর করে যে কোম্পানীর হয়ে কাজটি করবেন, তার ওপর। একটি জরিপে অংশ নিয়ে আপনি প্রতিক্রিয়া এবং মতামত জানাতে পারবেন। এজন্য আলাদাভাবে টাইপ করবার কোনো প্রয়োজন নেই। প্রশ্নের মাধ্যমেই আপনাকে অপশন দেয়া থাকবে। ২ ডলার থেকে ২০ ডলার পর্যন্ত আয় করতে পারবেন এই জরিপের কাজগুলোর মাধ্যমে। তবে আপনার প্রোফাইল কতটুকু স্বচ্ছল অর্থাৎ, কত ভালো কাজ জানেন, তার ওপর নির্ভর করে টাকা দেয়া হবে। সুতরাং, যত ভালো কাজ, তত বেশী আয়।
অ্যাডসেন্স ও অন্যান্য অ্যাডভিত্তিক নেটওয়ার্ক
সারাবিশ্বে এখন অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয় করা জনপ্রিয় মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আপনারা হয়তো অবাক হচ্ছেন যে জনপ্রিয় এই মাধ্যমটির নাম এতো পরে কেন বললাম। এর কারণ হচ্ছে, পূর্বের চারটি মাধ্যমের মতো অ্যাডসেন্সে টাকা আয় করা সহজ নয়। কীভাবে অ্যাডসেন্সের মাধ্যমে টাকা আয় করবেন?
প্রথমে আপনাকে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করতে হবে। যে কোন বিষয় বা জনরার ওপর ওয়েবসাইটটি হতে পারে। শিক্ষা, খেলাধূলা, বিনোদন, ভ্রমণ ইত্যাদি যে কোন কিছু নিয়ে সেটি হতে পারে। এবার আপনাকে সাইটের ট্রাফিক বাড়াতে হবে অর্থাৎ, মানুষের কাছে পৌঁছাতে হবে যাতে আপনার সাইটে বিজ্ঞাপন আসে। এভাবে টাকা উপার্জন করতে পারেন আপনি।
ক্রিয়েটিভ আইটি ইন্সটিটিউট এধরনের কাজে আপনাকে সহায়তা করতে পারে। যদি আপনি অ্যাডসেন্স কিংবা অ্যাডভিত্তিক নেটওয়ার্কিঙয়ের মাধ্যমে উপার্জন করতে চান, বিস্তারিত জানতে এই লিংকে যেতে পারেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
ব্যবসা বাণিজ্যের দিন দিন প্রসার ও প্রচার ঘটছে। প্রচারেই প্রসার- এই বহুল প্রচলিত কথাটি এখন আর শুধুমাত্র প্রবাদ হিসেবেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং প্রতিষ্ঠানগুলো চাইছে বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম ও অন্তর্জালের এই দুনিয়ায় যেন তাদের প্রসার হয়। অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং (affiliate marketing) এর সাহায্যে আপনি চাইলেই বেশ ভালো পরিমাণে উপার্জন করতে পারেন।
ফ্লিপকার্ট, অ্যামাজন, ই-বে, ক্লিকব্যাংক ইত্যাদি নানা সাইটগুলোতে সাইন-আপের মাধ্যমে আপনি তাদের পণ্যসেবা ও পণ্যকে আরো মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে পারেন। মোদ্দা কথায়, শুধু একটি ওয়েবসাইট তৈরির মাধ্যমে আপনি মানুষকে সঠিক পণ্যসেবাটি ক্রয় করতে সাহায্য করবেন এবং বিনিময়ে ৪-২০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন লাভ করতে পারবেন।
অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এর ওপর বিভিন্ন সেমিনার ও কোর্স করিয়ে থাকে ক্রিয়েটিভ আইটি। আপনি চাইলে যাচাই বাছাই করে সেখানে নিজের আগ্রহ প্রকাশ করতে পারেন।
ভার্চুয়াল অ্যাসিস্টেন্ট
চাইলেই আপনি কাউকে সাহায্য করতে পারেন, তবে এইজন্য যে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে, তা একেবারেই কিন্তু নয়। অনইলাইনের মাধ্যমে কারো ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে কাজ করতে পারেন আপনি। ওয়েবসাইট ম্যানেজমেন্ট, অনলাইন প্রচারণা, বিজ্ঞাপন, টুকটাক লেখালেখি কোডিং, জরিপ, গবেষণা ইত্যাদি নানা কাজ চাইলেই করতে পারেন। এজন্য পকেটে বেশ কিছু টাকা আসতে পারে।
ব্লগিং
এই যে এতোক্ষণ ধরে লেখাগুলো পড়লেন, এজন্য কিন্তু লেখকদের টাকা দেয়া হয়ে থাকে। অর্থাৎ, বিভিন্ন ব্লগসাইটে লেখালেখি করবার মাধ্যমে যেমন শাণিত হয়ে উঠবে আপনার লেখক প্রতিভা, ঠিক তেমনি টাকাও উপার্জন করতে পারবেন এই লেখালেখির মাধ্যমে। শত শত ব্লগ সাইট রয়েছে যেখানে মানসম্মত লেখকের খোঁজ করা হয়ে থাকে। চাইলে আপনিও পাঠিয়ে দিন না নিজের একটি লেখা! হয়ে উঠুন কনটেন্ট রাইটার।
ঘরে বসে না থেকে চাইলেই বেকার সময়টা কাজে লাগাতে পারেন। এইজন্য দরকার সদিচ্ছা এবং মনোবল। কিছু সময় ব্যয় করলেই আপনি হয়ে যেতে পারেন নিজের কর্মসংস্থানের মালিক, হয়তো হয়ে যেতে পারেন সফল একজন উদ্যোক্তাও। তো আর দেরি কেন?