হিম হিম শীত, শীত বুড়ি এলো রে,
কনকনে ঠান্ডায় দম বুঝি গেলো রে!
শীত বুড়ি চলেই এলো দোরগোড়ায়। সবাই মিলে তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন নতুন জামাকাপড় কেনায়। শরীরকে উষ্ণ রাখতে সকলের মাঝেই নানা ধরনের বাহানা। তা না হলে সর্দি, কাশি, জ্বর ইত্যাদি তো রয়েছেই। অনেকেই ঋতুর এই পরিবর্তন (Season change)-কে মেনে নিতে পারেন না। তাদের শরীরের মাঝে নানা ধরণের সমস্যা দেখা দেয়। চাইলেই কিন্তু আমরা খুব সহজেই শীতের মোকাবিলা করে নিজেদের শরীরকে সুরক্ষিত রাখতে পারি। আসুন, আজ শীতের হাত থেকে নিজেদের সুরক্ষা কি করে করবো, তার কিছু টিপস প্রিয়লেখার পাতায় জেনে নেয়া যাকঃ
১) ফ্লানেলের পায়জামা পড়ুনঃ
রাতের বেলা ঘুমোনোর সময় কিন্তু আমাদের পায়ের দিকটাতেই ঠান্ডা বেশি অনুভূত হয়। কাঁথা কিংবা কম্বলের সাহায্যে পা দুটো আরো ভালোভাবে ঢেকে নিতে চাই আমরা। তবে ফ্লানেলের একটি পায়জামা কিন্তু অনেকাংশেই রক্ষা করতে পারে আপনাকে। রাতের পোষাক হিসেবে ফ্লানেলের শার্ট কিংবা পায়জামা, অথবা দুটোই কিনে নিতে পারেন।
২) একটু ঢিলে পোষাক পড়ুনঃ
অনেক সময় শীতের হাত থেকে বাঁচার জন্য আমরা এতো গরম কাপড় পরে থাকি যে, রাতের বেলায় শরীরে ঘাম জমে গিয়ে ঠান্ডা লেগে যায়। এতে অনেকটাই হিতে বিপরীত হয়ে যেতে পারে। তবে এটিকে এড়ানোর জন্য যদি রাতের বেলা ঘুমোনোর সময় একটু ঢিলে পোষাক পরা হয়, তাহলে সে সমস্যার হাত থেকে বেশ সহজেই উদ্ধার পাওয়া যেতে পারে। তাছাড়া রাতে ঘুমোনোর সময় এপাশ ওপাশ হয়ে ঘুমোন না, এমন মানুষ কমই রয়েছে। তাই শীতের সময়ও উষ্ণ কিন্তু ঢিলে জামাকাপড় পরলে ভালো হয়।
৩) রাতের বেলা পায়ে মোজা পড়ুনঃ
ঘুমোনোর সময় কিংবা ঘরে হাঁটার সময়, পায়ে উলের মোজা পরিধান করুন। অনেকেই ঘরের ঠান্ডা মেঝের সাথে মোকাবিলা করবার জন্য স্যান্ডেল কিংবা চপ্পল পরে থাকে। তবে উলের একজোড়া মোজা স্যান্ডেলের চাইতে অধিক কার্যকর হয়।
৪) মাথা ঢেকে রাখুনঃ
ঘরে, বাইরে, ঘুমোনোর সময়- এই তিন স্থানেই মাথা ঢেকে রাখুন। শীতের সময় কানে প্রচন্ড ঠান্ডা অনুভূত হয়। এই ঠান্ডা থেকে বাঁচার জন্য নিজের কানকে ঢেকে রাখুন। বাজারে স্বল্প মূল্যে নানা ধরনের বাহারী টুপি পাওয়া যায়। এই টুপির সাহায্যে বেশ সহজেই সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেন।
৫) বিছানা গরম রাখুনঃ
সারা বছর বিছানার চাদর হিসেবে সুতি চাদরের বিকল্প কিছু নেই। তব শীত এলে বোধহয় আয়োজনটা একটু ভিন্ন হবারই কথা। ফ্লানেল, উল, ফ্লিস- ইত্যাদির তৈরি বিছানার চাদর আপনার রাতের ঘুমটাকে যেমন আরামদায়ক করবে, ঠিক তেমনি শীত থেকে রক্ষা করতেও সাহায্য করবে।
৬) বরফ মানব হয়ে যানঃ
ছবিতে কিংবা কার্টুনে বরফ মানব সম্পর্কে নিশ্চয়ই ধারণা আছে আপনাদের? পাথরের তৈরি ইগলুতে সারাবছর অবস্থান করে তারা। আপনিও চাইলে নিজের বিছানায় এমন ইগলু তৈরি করতে পারেন। নিজের চারপাশে কয়েকটি বালিশ একটির ওপর আরেকটি রেখে জড়ো করুন। এই বালিশগুলো ঠান্ডা বাতাস থেকে আপনাকে রক্ষা করবে।
৭) পানির বোতলে লঙ্কা রাখুনঃ
সর্দি হলে আমরা অনেকেই লঙ্কা গ্রহণ করে থাকি। শীতের সময় গরম পানির বোতল বা হট ওয়াটার পট হাতের কাছা থাকা অবশ্য জরুরী। তবে যদি এই ওয়াটার পটে লঙ্কা চুবিয়ে রাখা হয়, তা পানির সাথে মিশে শরীরের জন্য উপকারী হিসেবে কাজ করবে। এছাড়াও গরম পানির সাথে লঙ্কার গন্ধ আপনাকে ধোঁয়ার সাথে চমৎকার একটি ভাপ নিতে সাহায্য করবে।
৮) ঘরের দেয়াল রঙ করে ফেলুনঃ
শীতের সময় আমাদের ঘরের দেয়ালগুলোও ঠান্ডা হয়ে থাকে। কেমন হবে যদি অবাঞ্ছিত এই ঠান্ডা হাওয়াকে কিছুটা হলেও আটকে রাখা যায়? ঘরের দেয়াল রঙ করা বেশ ভালো একটি পন্থা হতে পারে। লাল, বাদামী, হলুদ ইত্যাদি রঙ যেমন চোখের আয়াসের জন্যও উষ্ণতা বয়ে আনে, ঠিক তেমনি ঘরকে সামান্য হলেও গরম রাখতে সাহায্য করবে।
৯) জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করুনঃ
শীতের সময় ঠান্ডা বাতাস ঠেকাতে সকলেই চাই। এক্ষেত্রে নিজেদের নানা গরম কাপড়ে সজ্জিত করি। তবে ভুলে যাই যে ঘরে থাকি, সে ঘরের কথা। জানালায় মোটা পর্দা ব্যবহার করা হলে অনেকাংশেই ঠেকিয়ে রাখা যাবে ঠাণ্ডা বাতাস।
১০) মেঝেতে কার্পেট কিংবা প্লাস্টিক র্যাগ ব্যবহার করুনঃ
মেঝের ঠান্ডা যেন আপনাকে কাবু করে ফেলতে না পারে, তাই কার্পেট কিংবা প্লাস্টিকের র্যাগ ব্যবহার করুন। ঘরের সৌন্দর্য যেমন বৃদ্ধি পাবে, ঠিক তেমনি শীতের হাত থেকেও চমৎকার একটি সুরক্ষা কবচ পেয়ে যাবেন।
পিঠা পুলি, নানা মজার খাবার, খেজুরের রস ইত্যাদি নানা মজার খাবার নিয়ে হাজির হয় শীত। তবে শরীর যদি ঠিক না রাখতে পারি, তাহলে কেমন করে এসব খাবার চেখে দেখব বলুন? সহজ এবং ছোট এসব পন্থা অবলম্বন করে মোকাবিলা করুন শীতের আর উপভোগ করুন চমৎকার সব খাবার।