১০৭টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা অদম্য সাজেদার গল্প – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / অদম্য / ১০৭টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা অদম্য সাজেদার গল্প

১০৭টি বাল্যবিবাহ বন্ধ করা অদম্য সাজেদার গল্প

বাংলাদেশের বিশেষত গ্রামীণ এলাকার রন্ধ্রে রন্ধ্রে মিশে থাকা একটা ব্যাধির নাম বাল্যবিবাহ। চোখের পানি ফেলে, বাবা-মায়ের কাছে অনেক অনুরোধ করে কিছুদিনের জন্য হয়তোবা সেই বিয়ে আটকানো যায়, কিন্তু সেই কিছুদিনটাই বা কতদিন? এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার জন্য প্রয়োজন সাজেদা আক্তারের মতো প্রতিবাদী নারীদের। সাজেদা আক্তার গ্রামের বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও কিশোর-কিশোরীদের অধিকার আদায়ের সংগ্রামী কর্মী। যেখানে বাল্যবিবাহ, সেখানেই এই কিশোরী প্রতিরোধে এগিয়ে আসছে। এগিয়ে আসছে নারীদের উত্ত্যক্তকারী বখাটে প্রতিরোধেও। এরই মধ্যে তার চেষ্টায় এলাকার ১০৭টি বাল্যবিবাহ বন্ধ হয়েছে।

বরগুনার এক দরিদ্র পরিবারের এই কিশোরী সাজেদা নীরবেই এত সব বড় কাজ করে যাচ্ছে। পাশাপাশি চালিয়ে যাচ্ছে নিজের পড়াশোনাও। এসব কারণে সাজেদা আক্তারকে এ বছর ‘ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজ’-এর জন্য বাংলাদেশ থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এই পুরস্কার শিশুদের নোবেল পুরস্কার হিসেবে খ্যাত। শিশুদের অধিকার রক্ষার জন্য যেসব শিশু সাহসের সঙ্গে লড়াই করে, প্রতিবছর তাদের এই পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। ২০১৩ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিল পাকিস্তানের মালালা ইউসুফজাই।

বরগুনার সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের মাইঠা গ্রামের দরিদ্র পরিবারের মেয়ে সাজেদা আক্তার। এখন সে বরগুনা সরকারি মহিলা কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। বাবা সানু মিয়া রিকশাচালক। তিনি বলেন, ‘রিকশা চালাইয়্যা সোংসার চালানেই কষ্ট। এত কষ্টের পর লোকজনে যহন মাইয়্যার সাহসী কাজের প্রশংসা করে, তহন মনটা খুশিতে ভইর‍্যা যায়।’

এক শতক জমির ওপর তাদের দোচালা টিনের ছোট্ট ঘরে কথা হয় সাজেদার সঙ্গে। সাজেদা বলল, ‘আমার বড় বোনের বিয়ে হয়েছিল। তাঁর পরিবারে নানা অশান্তি-দুর্ভোগ দেখে বুঝতে পারি, তাঁর এই পরিণতির পেছনে দায়ী বাল্যবিবাহ। তা ছাড়া আমাদের গ্রামের মেয়েদের অল্পবয়সে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হতো। সিদ্ধান্ত নিই আমি বাল্যবিবাহ করব না আর কোনো কিশোরীরও বাল্যবিবাহ হতে দেব না।’

২০০৭ সালের প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড় সিডরে ভীতসন্ত্রস্ত শিশুদের ওপর যে নেতিবাচক মানসিক প্রভাব পড়েছিল, তা কাটাতে বিদেশি সাহায্য সংস্থা প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল সাজেদাদের এলাকায় একটি শিশু সংগঠন গড়ে তোলে। ২০০৯ সালে ওই শিশু সংগঠনের সদস্য হয় সাজেদা। এর কয়েক মাস যেতে না যেতেই সবাই তাকে সংগঠনের সভাপতি করে দেয়। সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডের সেটাই তার হাতেখড়ি।

২০১৩ সালে এলাকার আরেকটি সংগঠন কিশোর-কিশোরী ক্লাবের সদস্য হয় সাজেদা। ওই সংগঠনের হয়ে গ্রামে গ্রামে বাল্যবিবাহ বন্ধ, ইভ টিজিং, নেশার বিরুদ্ধে সচেতনতামূলক পথনাটক, গান, সভা করতে থাকে। এতে এলাকার কিশোর-কিশোরীদের সাড়াও মেলে। এই সংগঠনে এলাকার অন্তত ১০০ কিশোর-কিশোরী সংগঠিত হয়। তারা নিজেরাই গান লেখে, সুর করে, নাটকের চিত্রনাট্য লেখে। এভাবে চলতে থাকে স্বেচ্ছাশ্রমের কাজ।

বুড়িরচর ইউনিয়নের দক্ষিণ লবণগোলা গ্রামের গৃহবধূ নাসিমা আক্তার বলেন, ‘আমার মেয়ে নবম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ওর বাবা বিয়ে ঠিক করে, কিন্তু মেয়ে এতে রাজি ছিল না। বিষয়টি মেয়ের সহপাঠী সাজেদার কানে যায়। সাজেদা আমাদের বাড়িতে আসে এবং বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে আমাদের বোঝায়। এতে আমাদের ভুল ভাঙে। সাজেদা আমাদের সেই সর্বনাশ থেকে রক্ষা করেছে।’
সাজেদা বলেন, ‘প্রথম দিকে এলাকার কিছু লোক এসব কাজকে ভালো চোখে দেখত না। নানা কথা বলত। কিন্তু কিছু কানে নিইনি। আমি আমার কাজ করে গেছি। এখন আমার লক্ষ্য জেলার সর্বত্র বাল্যবিবাহ, ইভ টিজিং ও মাদকের বিরুদ্ধে কিশোর-কিশোরীদের জাগ্রত করা।’

মাইঠা এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য কামাল হোসেন বলেন, ‘প্রথম দিকে সাজেদার এসব কাজ আমাদের ভালো লাগেনি। পরে যখন দেখি দরিদ্র পরিবারের মেয়েটি পড়াশোনার পাশাপাশি এলাকার কিশোরীদের ওপর পারিবারিক ও সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াচ্ছে, তখন আমাদের ভুল ভাঙতে শুরু করে। এখন ওর এসব সাহসী কর্মকাণ্ড নিয়ে আমরা গর্ব করি।’

বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. নুরুজ্জামান বলেন, ‘একটি দরিদ্র পরিবারের কিশোরী যেভাবে দারিদ্র্য, বাল্যবিবাহ, যৌন হয়রানি, ঝরে পড়া শিশুদের বিদ্যালয়ে ফিরিয়ে নেওয়া এবং মাদকের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, সেটা আমাদের সমাজে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত।’ প্ল্যান ইন্টারন্যাশনালের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের হেলথ স্পেশালিস্ট মুহাম্মদ ফয়েজ কাউসার বলেন, সাজেদাকে এ বছর ‘ইন্টারন্যাশনাল চিলড্রেনস পিস প্রাইজের’ জন্য বাংলাদেশ থেকে তাকে একমাত্র প্রতিনিধি হিসেবে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

About farzana tasnim

Check Also

সাবরিনা রশিদ : অনন্য এক উদ্ভাবকের গল্প

পুষ্টিবিজ্ঞানী ডক্টর সাবরিনা রশিদ । কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ১৯৯৬ সালে ব্র্যাকের গবেষণা …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *