মোসাদঃ এক দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার আদ্যোপান্ত – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / ফিচার / মোসাদঃ এক দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার আদ্যোপান্ত

মোসাদঃ এক দুর্ধর্ষ গোয়েন্দা সংস্থার আদ্যোপান্ত

সিআইএ, এমআইসিক্স, কেজিবি, মোসাদ নামগুলো পরিচিত লাগছে? মোসাদের নাম হয়তো কমবেশি সবাই শুনেছেন, মাসুদ রানার ভক্তদের তো এই নামটি আরও আগে জানার কথা। মোসাদের এমন কিছু অপারেশন রয়েছে যেগুলো গল্পের বই বা সিনেমাকেও হার মানায়। পৃথিবীর সব বড় ও মাঝারি শক্তিধর দেশেরই নিজস্ব বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে। কিন্তু ইসরায়েলের ‘মোসাদ’কে ঘিরে যেসব রহস্যজনক ও চাঞ্চল্যকর গল্প চালু আছে, তার কোন তুলনা হয়না।

মোসাদ ‘WORLD’S MOST EFFICENT KILLING MACHINE’ নামেও পরিচিত। গুপ্ত হত্যায় মোসাদ এক এবং অদ্বিতীয়। মার্কিন সিআইএ এবং মোসাদের ভিতরে প্রধান পার্থক্য হলো সিআইএ গুপ্ত হত্যার চেয়ে সরাসরি হামলা বেশি চালায়। অন্যদিকে মোসাদ খুব গোপনে তাদের শিকারদের শেষ করে।

রাষ্ট্র হিসেবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠার ১৯ মাসের মাথায় দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বেন গুরিয়ন ‘মোসাদ’ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। সেটা ছিল ১৯৪৯ সাল। তবে ইসরায়েল প্রতিষ্ঠার আগেই যেসব ইহুদি নিষিদ্ধ সংগঠন সংগ্রাম চালাচ্ছিল, তাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতে যে কাঠামো গড়ে উঠেছিল, তাকে ‘মোসাদ’ এর পূর্বসূরি বলা চলে।

হিব্রু ভাষায় ‘মোসাদ’ শব্দের অর্থ ইন্সটিটিউট৷ আনুষ্ঠানিকভাবে এই বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম ‘দ্য ইনস্টিটিউট অফ ইনটেলিজেন্স অ্যান্ড স্পেশাল অপারেশনস’। উল্লেখ্য, ইসরায়েলে আরও দু’টি গোয়েন্দা সংস্থা রয়েছে – অভ্যন্তরীণ গোয়েন্দা সংস্থার নাম ‘শিন বেত (Shin bett)’ এবং সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার নাম ‘আগাফ হা-মোদি ইন’ – সংক্ষেপে ‘আমন (Aman)’।

চরম গোপনীয়তার বেড়াজালে মোড়া ‘মোসাদ’ সম্পর্কে খুব কমই জানা যায়। এমনকি এই সংস্থার সদর দপ্তরেরও কোন ঠিকানা বা টেলিফোন নম্বর নেই। কর্মী সংখ্যাও কারো জানা নেই। ইসরায়েলের আইন অনুযায়ী শুধুমাত্র সংস্থার প্রধানের নাম প্রকাশ করা যায়। ‘মোসাদ’ এর ওয়েবসাইটে সামান্য কিছু তথ্য রয়েছে৷

অন্যান্য বৈদেশিক গোয়েন্দা সংস্থার তুলনায় ‘মোসাদ’ এর দায়িত্ব বা কাজের পরিধির বেশ পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। সংস্থাটির স্বঘোষিত উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে ইসরায়েলের সীমানার বাইরে গোপনে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করা, শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলো যাতে বিশেষ ধরনের অস্ত্র তৈরি বা সংগ্রহ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা এবং দেশে-বিদেশে ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুর উপর হামলার ষড়যন্ত্র আগাম প্রতিরোধ করা। এছাড়া এই তালিকায় রয়েছে আরও কিছু উদ্দেশ্য। যেসব দেশে ইসরায়েলের অভিবাসন সংস্থা আইনত সক্রিয় হতে পারে না, সেই সব দেশ থেকে ইহুদিদের ইসরায়েলে নিয়ে আসার দায়িত্বও পালন করে ‘মোসাদ’। মনে রাখতে হবে, বিশ্বের যে কোন ইহুদি ব্যক্তির জন্য ইসরায়েলের দ্বার খোলা রয়েছে, যাতে তারা সেখানেই পাকাপাকিভাবে বসতি স্থাপন করতে পারে। ইসরায়েলের সীমানার বাইরে বিশেষ অভিযানের পরিকল্পনা ও কার্যকর করার বিশেষ দায়িত্বও পালন করে ‘মোসাদ’।

ডানে মোসাদের বর্তমান চিফ কোহেন

দুবাইয়ে হামাস কমান্ডার মাহমুদ আল-মাবু’র হত্যার পেছনে ‘মোসাদ’ জড়িত বলে সন্দেহ করা হয়। অতীতেও বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে এমন অনেক রহস্যজনক হত্যাকাণ্ড বা অপহরণের ঘটনায় ‘মোসাদ’ এর এজেন্টদের হাত আছে তা স্পষ্টভাবে টের পাওয়া গেছে কিংবা আঁচ করা গেছে। রাষ্ট্রের আদর্শে অনুপ্রাণিত এই সব এজেন্টরা যে উচ্চ মাত্রার পেশাদারীত্ব ও দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে থাকেন, তা অনেকেরই আতঙ্ক, সমীহ ও কিছু ক্ষেত্রে ঈর্ষার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। এমনকি অনেক দেশের গোয়েন্দা সংস্থা বিভিন্ন ভাবে ‘মোসাদ’কে অনুকরণ করারও চেষ্টা করে থাকে।

‘মোসাদ’ এর উল্লেখযোগ্য কিছু অপারেশনের কথা এখানে না বললেই নয়।

  • ১৯৬৭ সালে মিশরের সাথে ইসরায়েলের যে যুদ্ধ হয়েছিল তার পেছনে অবদান মুলত মোসাদের। মোসাদ মিসরের বিমান বাহিনীর উপর নজর রাখত। মিসরের বিমান বাহিনীর অনেকেই সকাল সাতটা থেকে আটটার ভিতরে নাস্তা করে এবং এই সময়ই শিফট চেঞ্জ হত। ইসরায়েল হঠাৎ সেই সময় একদিন হামলা চালিয়ে মিসরীয় বিমান বাহিনীর প্রায় অর্ধেকের মত জঙ্গি বিমান উড়িয়ে দেয়। মাত্র ছয় দিন ইসরায়েলের সামনে যুদ্ধ করতে পারে আরবরা। যার পুরো অবদান এই মোসাদের।
  • ১৯৭০ সালে ফিলিস্তিনে এক নয়া গ্রুপ গড়ে ওঠে ব্ল্যাক সেপ্টেম্বর নামে। জার্মানির মিউনিখে অলিম্পিক গেমস চলাকালে এরা ১১ জন ইসরাইলী অ্যাথলিট কে কিডন্যাপ করে। ২০০ ফিলিস্তিনির মুক্তি ও নিজেদের সেইফ প্যাসেজ দেওয়া ছিলো ওদের দাবী, জার্মান সরকার তা মেনে নেয় এবং চুক্তির জন্য মিলিটারি এয়ারপোর্টে আসতে বলে। মিলিটারি এয়ারপোর্টে জার্মান এয়ার ফোর্স কমান্ডোরা আগে হতেই প্রস্তুত ছিলো। অপহরনকারীরা যখনই বুঝতে পারে তাদের ফাঁদে ফেলা হয়েছে তখনই সব বন্দী অ্যাথলিটদের হত্যা করা হয়। পুলিশের পাল্টা গুলিতে ৫ জন অপহরনকারী নিহত ও তিন জন বন্দী হয়।
মোসাদের চিহ্নিত স্পাইরা

ঘটনাটি ছিলো অতি ভয়াবহ। মোসাদ স্পেশাল টিম গঠন করে অপারেশান Wrath of God ঘোষনা করে। পুরো ইউরোপ জুড়ে ব্ল্যাক সেপ্টেমবার গ্রুপকে খুঁজে খুঁজে হত্যা করা হয়। ১৯৭২ হতে ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত এই গুপ্তহত্যার কাজ চলতে থাকে। পিএলওর নেতারা প্রায় দিশা হারাবার উপক্রম। ইউরোপ জুড়ে মোসাদের এই হান্টিং ডাউনে ভুলক্রমে নরওয়েতে এক নিরীহ মরোক্কান ওয়েটারকে হত্যা করে ফেলে মোসাদ। নরওয়ের পুলিশ ৬ মোসাদ এজেন্টকে গ্রেফতার করে।

মোসাদের অনেক সফলতার পাশাপাশি কিছু ব্যর্থতা আছে। এবার শোনা যাক সেই ব্যর্থতার গল্প।

কিল খালিদঃ হামাস নেতা খালিদকে হত্যা করতে গিয়ে মোসাদ পুরোপুরি বিফল হয়। ‘দ্য ফেইলড অ্যাসাসিনেশন অফ মোসাদ এন্ড দ্যা রাইজ অফ হামাস’ বই থেকে সংক্ষিপ্ত আকারে ঐ অপারেশানটা তুলে ধরা যায়। ১৯৮০ হতে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত মোসাদ দুর্দান্ত আকারে পিএলও এর নেতাদের হত্যা করে একেবারে কোমর ভেঙে দেয়। পিএলও ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে যায় স্বাধীনতা সংগ্রাম হতে। উল্টো পথে হামাসের উত্থান হতে থাকে। খালিদ মিশাল অনেক বড় হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। ১৯৯৭ সালে খালিদ তার গাড়ি হতে নেমেই মাত্র হামাস অফিসে ঢুকবে এ সময়েই হাতে ব্যান্ডেজ লাগানো তিন জন কানাডিয়ান ট্যুরিস্ট তার গাড়ির পাশেই দাড়িয়ে ছিলো।

একজন টুরিষ্ট (মোসাদের স্পাই) হঠাৎ খালিদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে তার কানে কিছু একটা পুশ করতে চেষ্টা করে। কৌশলে সে বিষ ঢেলে দিয়েছে তার শরীরে। চুম্বকটানের মত খালিদের দেহরক্ষী টুরিস্টের উপর পুরো শরীরের চাপ দিয়ে বসিয়ে দেয়। খালিদ ছিটকে দুরে সরে যায়। আক্রমনকারীদের একজন পালিয়ে গিয়ে ইসরাইলী এমব্যাসীতে লুকিয়ে পড়ে। বাকী একজনকে খালিদের দেহরক্ষী আবু সাইয়াফ ধাওয়া করে। নিজের এতোদিনের ট্রেনিং কাজে লাগায় সাইয়াফ। মল্লযুদ্বের মত কুস্তি শুরু হয় স্পাই ও সাইয়াফের মধ্যে, স্পাইদের ধারালো হান্টিং নাইফের সাহায্যে আহত হয় সাইয়াফ, সাইয়াফের পাল্টা এক ঘুষিতে এক স্পাই মাটিতে পড়ে কুপোকাত হয়ে যায়।

পরে সাইয়াফকে হাসপাতালে এবং স্পাইদের পুলিশের কাছে পাঠানো হয়। খালিদের অবস্থা ধীরে ধীরে খারাপ হতে থাকে, ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তিনি মারা যাবেন বলে দিলেন ডাক্তাররা। হাসপাতালে ভর্তি করা হলো তাকে। জর্ডানের বাদশাহ হোসাইন এবার সরাসরি ফোন দেয় নেতানিয়াহুকে। যদি খালিদ মিশাল মারা যায়, তিন মোসাদ স্পাইকে খুন করা হবে, এবং ইসরাইলের সাথে শান্তি চুক্তি বাতিল হবে। এবার মোসাদ প্রধান সতর্ক হয়ে ওঠেন।

মোসাদের চীফ নিজেই ল্যাবরেটরীতে মডিফাই করা বিষের প্রতিষোধক নিয়ে আম্মানে আসেন। খালিদ মিশাল সুস্থ হয়ে ওঠেন। এই ব্যর্থ হামলার ফলাফল এমনই করুণ ছিলো যে মোসাদের চীফকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়। খালিদ মিশালের উপর এই হামলায় কানাডার গোয়েন্দা সংস্হা (csis) ও জড়িত আছে বলে মনে করা হয়। ইসরায়েলের চির শত্রু ইরানের হাতেও মোসাদের বেশ কিছু বিফলতার প্রমাণ রয়েছে।

বর্তমানে সংগঠন পরিচালনা পদ্ধতিঃ

স্বাভাবিকভাবে ইসরায়েলের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দিয়ে পরিচালিত মোসাদের মোট আটটি বিভাগ রয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি বিভাগ সম্পর্কিত কিছু তথ্য জানা যায়।

কালেকশন ডিপার্টমেন্ট: এটি মোসাদের সবচেয়ে বড় বিভাগ। বহির্বিশ্বে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, সাংবাদিকসহ অন্যান্য ছদ্মবেশে কাজ করে এই বিভাগের এজেন্টরা।

পলিটিক্যাল অ্যাকশন ডিপার্টমেন্ট: এ গ্রুপের কাজ প্রতিটি বন্ধুভাবাপন্ন দেশের গোয়েন্দা ও স্পাই সংস্থার সঙ্গে সংযোগ রাখা।

স্পেশাল অপারেশন ডিপার্টমেন্ট: এই গ্রুপকে গুপ্তহত্যার কাজে ব্যবহার করা হয়।

 

ল্যাপ ডিপার্টমেন্ট: এই গ্রুপ প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। যাবতীয় যুদ্ধের পরিকল্পনাও এই গ্রুপ থেকে হয়ে থাকে।

রিসার্চ ডিপার্টমেন্ট: এই গ্রুপের গবেষকরা বিভিন্ন প্রযুক্তি গত জিনিস উদ্ধাবন নিয়ে গবেষণা করে ।

প্রকৃতপক্ষে ইসরায়েল নামক রাষ্ট্রটি মুলত টিকে রয়েছে তাদের মোসাদের জন্যই। যতদিন মোসাদ পুরোপুরি সক্রিয় থাকবে ততদিন ইসরায়েলকে পরাজিত করা কোনমতেই সহজ হবেনা। বর্তমান মোসাদ প্রধানের নাম ইয়োসি কোহেন।

About farzana tasnim

Check Also

কথা বলবার সময় আমরা ‘অ্যা’, ‘উম’ এসব উচ্চারণ করি কেন?

কথা বলবার সময় আমরা অনেকেই মুখ দিয়ে ‘অ্যা’, ‘উম’ ইত্যাদি আওয়াজ নিঃসরণ করে থাকি। এর …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *