অমলেটকে আমরা সবাই চিনি ব্রেকফাস্ট আইটেম হিসাবে। কিন্তু আমরা কি জানি অমলেট নিজেই একটি পরিপূর্ণ ব্রেকফাস্ট। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশেও অমলেট দারুণ জনপ্রিয় একটি খাবার। আজ আমরা বলবো বিভিন্ন দেশের জনপ্রিয় কিছু অমলেটের কথা এবং কিভাবে আমরা তা তৈরি করতে পারি এই নিয়ে কিছু টিপস।
প্রথমেই বলতে হয় যে অমলেট এর বেসিক মূলত একই, শুধু রেসিপি এর তফাৎ এর জন্য উপকরণগুলো বদলে যায়, আর সেই সাথে বদলে যায় অমলেটের স্বাদ।
ফ্রেঞ্চ অমলেটঃ
বলা হয় ফ্রেঞ্চ অমলেট হল অমলেটের বস। পৃথিবীর যে কোন প্রান্তে যেয়ে যদি আপনার ডাল-ভাত খাওয়ার ইচ্ছে হয়, তো বেশ কষ্ট হয়ে যাবে তা খুঁজে পাওয়া। কিন্তু যদি আপনার ফ্রেঞ্চ অমলেট খাওয়ার ইচ্ছে হয়, তবে যেকোনো ভালো বা মাঝারি টাইপের হোটেলেও আপনি পেয়ে যাবেন আপনার পছন্দের ফ্রেঞ্চ অমলেট।
উপকরণঃ
- ডিম ৩ টি,
- বাটার ২ টেবিল চামচ,
- ১/২ চা চামচ গোল মরিচ গুঁড়া,
- ১ টেবিল চামচ দুধ,
- লবন পরিমাণ মত।
প্রস্তুত প্রণালীঃ
বাটার ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসাথে ভাল করে ফ্যাটাতে হবে যেন সুন্দর ফোম হয়। ফোমের উপর নির্ভর করে আপনার অমলেট কত ভালো হবে। এরপর বাটার গরম করে ফোমের মিক্সচারটি দিয়ে দিতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যেন কোথাও ডিম কাঁচা না থাকে। ব্যাস হয়ে গেলো সুস্বাদু ফ্রেঞ্চ অমলেট।
চীজ অনিয়ন অমলেটঃ
খুবই সোজা একটা রেসিপি। আর রেসিপিতে কি কি লাগছে তা কিন্তু আমরা এর নাম থেকেই বুঝতে পারি। হ্যাঁ ডিম, পেঁয়াজ, গোল মরিচ গুঁড়া এবং পারমিসিয়ান চীজ।
অমলেটের মূল প্রস্তুত প্রণালী কিন্তু একই, ডিমের সাথে বাকী সব উপকরণ ভালোভাবে ফেটিয়ে নেয়ার উপর অমলেটের সফটনেস এবং আউটলুক নির্ভর করে। আর আমাদের চীজ অনিয়ন অমলেটে সব শেষে যোগ হবে চীজ যা এই অমলেটকে অন্য অমলেট থেকে আলাদা ও সুস্বাদু করেছে।
মাসালা অমলেটঃ
কি, নাম পছন্দ হয়েছে? নামের মতো এর টেস্ট ও কিন্তু সেই রকম। মাসালা অমলেট মূলত স্পাইসি টাইপ অমলেট। যারা মুখরোচক খাবার পছন্দ করে তাদের জন্য এটি পারফেক্ট আইটেম। তো চলুন দেখে নেয় কি কি লাগছে এটি তৈরি করতে।
বাটার, ফ্রেস ধনেপাতা, পেঁয়াজ পাতা, গ্রেট করা চীজ এবং বিভিন্ন ধরনের মাসালার গুঁড়া এই কারনে এর নাম কিন্তু মাসালা অমলেট। বাটার ছাড়া বাকি সব উপকরণ একসাথে ভাল করে ফ্যাটাতে হবে এবং সবশেষে বাটার গরম করে মিক্সচারটি দিয়ে সুন্দর গোল্ডেন ব্রাউন কালার করে টোষ্টেড পাউরুটির সাথে পরিবেশন করুন মজাদার এই অমলেট।
প্রণ মাসালা অমলেটঃ
বুঝতেই পারছি, যাদের মাছ পছন্দ তাদের আমার আগের রেসিপি দেখে রাগ হচ্ছিল যে শুধু মাসালা অমলেট কেন? সাথে কিছু প্রণ দিলে কি হতো? আর তাই এই রেসিপিটা আপনাদের জন্য, আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে।
মূলত আগের রেসিপি আর এই রেসিপি খুবই কাছাকাছি। প্রন এর প্রধান আকর্ষণ প্রন ভাল করে ভেজে মাসালা অমলেটের মিক্সচার এর সাথে বাটারে ফ্রাই করলেই রেডি আমাদের প্রন মাসালা অমলেট।
আফ্রিকান অমলেটঃ
এবার মাটন লাভারদের জন্য ছোট্ট নিবেদন আমার এই আফ্রিকান অমলেট। এই অমলেটও কিন্তু স্পাইসি ধরনের। চলুন দেখি এর জন্য কি কি লাগছে উপকরণ।
ছোট করে কাটা মাটন, ডিম, লাল পাপড়িকা, পেঁয়াজ, লাল মরিচের পেস্ট আর ফ্রাই করার জন্য বাটার। মাটনটা ভালো করে ভেজে নিয়ে ডিম সহ বাকী উপকরন একসাথে বিট করে বাটারে ফ্রাই করলেই রেডি আমাদের মজাদার আফ্রিকান অমলেট।
চিকেন অমলেট উইথ সতে মাশরুমঃ
এই অমলেটের মূল আকর্ষণ হল এটি হাই প্রোটিন অমলেট আর উপকরন কিন্তু বেশি না, চলুন তৈরি করে ফেলি এই সুস্বাদু অমলেট।
এই অমলেটের প্রধান পার্থক্য হল আমরা এখানে শুধু ডিমের সাদা অংশটা নিবো। চিকেন ছোট করে কেটে মসলা দিয়ে ভেজে ডিমের ব্যাটার এর সাথে মিশিয়ে বাটারে ভাজলেই তৈরি হয়ে যাবে ভিন্ন ধরনের এই অমলেট, আর এটি পরিবেশন করুন সতে করা মাশরুমের সাথে। একে আপনার একটি মিল এর সাথে তুলনা করা যায়।
অমলেট বানানোর কিছু টিপস আপনাদের সাথে শেয়ার করলামঃ
১. অমলেট বানানোর ডিমগুলো যেন সবসময় রুমের তাপমাত্রায় থাকে।
২. অমলেটকে একটু থকথকে করার জন্য একটু দুধ যোগ করুন।
৩. ডিম ততক্ষণ বিট করুন যেন ডিমের সাদা অংশ না দেখা যায়।
৪. ব্যাটার ভালো করে গরম করতে হবে যেন বাটারের বাবল না দেখা যায়। তারপর ডিমের মিক্সচার বাটারে দিতে হবে। এতে অমলেটের টেস্ট ভালো হয়।
৫. পারফেক্ট অমলেটের কালার হলুদ হয়ে থাকে, বাদামি নয়।
৬. মাঝারি আঁচ, পারফেক্ট সাইজের প্যান এই সব একটি পারফেক্ট অমলেটের জন্য প্রয়োজন।
আশা করি অমলেট নিয়ে আমাদের এই ছোট্ট আয়োজন আপনাদের পছন্দ হবে এবং অমলেট খাওয়ার জন্য রেস্টুরেন্ট না গিয়ে বাসায় একটু চেষ্টা করলেই আমরা সুস্বাদু ও মজাদার এই অমলেটগুলো তৈরি করতে পারবো। তাহলে অমলেটের জন্য আর নয় রেস্টুরেন্ট, বাসাই হোক নতুন রেস্টুরেন্ট।