এক যে আছেন মিসির আলি! – Creative IT Blog
Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611

Notice: Trying to access array offset on value of type bool in /home1/cjsmpham/_addon/priyolekha.com/wp-content/plugins/taqyeem/taqyeem.php on line 611
Home / সাহিত্য / এক যে আছেন মিসির আলি!

এক যে আছেন মিসির আলি!

যুক্তিই তার কাছে শেষ কথা। অতিপ্রাকৃতিক, ভয়াল, ভয়ংকর- এই শব্দগুলো তার ডিকশনারীতে নেই। চরমতম বিপদের মুহুর্তে দাঁড়িয়েও তিনি বলেন, এর পেছনে কোন না কোন ব্যাখা অবশ্যই আছে। ব্যাখার অতীত কিছুই থাকতে পারে না। হলদে পাঞ্জাবীর হিমুর কাছে লজিকের ভাণ্ডার শূন্যের কোঠায় বললেই চলে। তবে মিসির আলি একজনই ছিলেন, একজনই আছেন, একজনই থাকবেন। বিজ্ঞান, যুক্তি আর অকাট্য বিশ্লেষণই মধ্যবয়স্ক মিসির আলির প্রধান মারণাস্ত্র। কে তিনি?

বলছিলাম বাংলা সাহিত্যের প্রয়াত কিংবদন্তী হুমায়ূন আহমেদের অনবদ্য সৃষ্টি মিসির আলির কথা। জগতের অব্যাখ্যাত কিছু রহস্যের সমাধান তিনি করেছেন তার নিজস্ব ভঙ্গিমায়। যেসব রহস্যের সমাধান তিনি পারেন নি, সেসব রহস্য বন্দী হয়ে আছে পেট মোটা এক খাতায়। সে খাতা আমাদের সামনে পুরোপুরি আসে না। যখন আসে, কোন তল খুঁজে পাই না আমরা। কিভাবে সম্ভব? এমন ঘটনাও ঘটে থাকে তাহলে এই পৃথিবীতে? সত্যিই, আমাদের জানার কত কিছুই না আছে। আসুন, পরিচিত হয়ে নিই এই মানুষটির সাথে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মিসির আলি, তবে খন্ডকালীন। তার কিছু বই বাজারে রয়েছে, যার রয়্যালিটি পেয়ে তিনি তার একার সংসারে দিব্যি বেঁচে আছেন। সঙ্গে থাকে কখনো কাজের ছেলে, যে তার কাছে পড়ালেখা শেখে। আবার কোন গল্পে দেখা যায় ঐ কাজের ছেলেই তার সংসারের ব্যবহার্য নিয়ে পালিয়ে যায়। ভীষণ মন খারাপ করেন তিনি। তিনি দুঁদে গোয়েন্দা শার্লক হোমসের মত ক্ষুরধার বুদ্ধির অধিকারী নন, আবার মাসুদ রানার মত অকুতোভয় চিরনবীন বাঙালি স্পাইও নন। তবুও পাঠক প্রচন্ড মায়ায় আপন করে নিয়েছে মিসির আলিকে। হুমায়ুন আহমেদ মিসির আলি সম্পর্কে প্রথম ভাবেন নর্থ ডাকোটায়। গাড়ি চালাতে চালাতে তার মাথায় হঠাৎ চলে আসে এই চরিত্রের কথা।
প্রথম উপন্যাস দেবী প্রকাশিত হবার পরই চমকে ওঠে পাঠক। এমন চরিত্রের সাথে পরিচয় তো আগে ছিল না! কে এই মিসির আলি? ভিন্ন ধরণের কনসেপ্ট নিয়ে লেখা দেবী সমাদৃত হয় পাঠকের কাছে। মিসির আলি নিজের সম্পর্কে বলেন তিনি কোন গোয়েন্দা নন। সামান্য একজন শিক্ষক।

অন্য ভূবনের তিন্নি তাকে কষ্ট দেয় প্রচন্ড। মনের জোরে লড়াই করেন তিনি তিন্নির সাথে। প্রবল মাথাব্যথায় তিনি রাতের ট্রেনে ঢাকা ফিরে যান। কিছুই মনে থাকে না তার আর। স্ত্রীর সাথে বেড়াতে এসে একটি বাড়ি দেখে তিনি অবাক হয়ে যান। কে তাকে উপহার দিতে পারে অত সুন্দর একটি বাড়ি? লেখক এখানে তার ভুল স্বীকার করেন। মিসির আলির মত চরিত্রদের অকৃতদারই বোধহয় থাকা উচিত। হিমুর সাথে মিলন হয় না রুপার। মিসির আলিও ছাত্রী নীলুর প্রতি আকর্ষণ বোধ করেন। তবে সে আকর্ষণের জন্য আবার নিজের মনেই লজ্জিত হন তিনি!

মিসির আলির চশমাতে দেখা যায় ডক্টর শাহানার রহস্য মিসির আলি সমাধান করেছেন অদ্ভুতভাবে। পড়তে পড়তে মনে হয়, আরে এমনটাই তো হবার কথা ছিল!
আরেক গল্পে বন্ধুর সাথে তিনি ছুটে যান প্রত্যন্ত গ্রামে; সাধুবেশী এক সন্ত কামনার তাড়নায় খুন করেছিলেন এক কিশোরীকে। আলো আঁধারির ছায়ায় শান্ত সে পরিবেশে মিসির আলি খুলতে থাকেন একের পর এক রহস্যের জট। মাথা ঘোরাতে থাকে বন্ধুর।

আমি আসলে আজ মিসির আলির কোন বইয়ের সারসংক্ষেপ লিখতে আসি নি। একজন মানুষ, প্রথম দেখায় যাকে দেখে আহামরি বলে কিছু মনে হয় না, তিনিই পাহাড় সমান ভালোবাসা কুড়িয়েছেন মানুষের কাছ থেকে। তার হাত ধরে মানুষ ভাবে, এমন মানুষের হাত ধরলেও পুণ্য হয়। রুপা নামের মায়ের কাছে তিনি যখন সন্তানের সন্ধান দেন, সেলিব্রিটি অভিনেত্রী রুপা তার ধন্যবাদ জানায় চিঠির মাধ্যমে। সাধারণ এক মা হয়ে।

মিসির আলি চরিত্রটা এতটাই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল যে, আমি একটা সময় তাকে ভাবছিলাম আমার পরিচিত কেউ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হবার পর কতবার ছুটে গিয়েছিলাম সাইকোলজি ডিপার্টমেন্টে, তার কোন ইয়ত্ত্বা নেই। যদি সত্যিই কাঁচাপাকা চুলের গোবেচারা মিসির আলি সত্যিই থেকে থাকেন?

শরীরের খেয়াল থাকে না মিসির আলির। শরীরের কলকব্জার অনেক কিছুই নষ্ট। লিভার, অগ্ন্যাশয়ে গোলমাল, রক্তের কার্যকারিতা হ্রাস ইত্যাদি নানা ধরণের সমস্যায় প্রতিনিয়তই মিসির আলি ভুগতে থাকেন। এজন্য তাকে প্রায়ই যেতে হয় হাসপাতালে। অল্পতেই কাবু হয়ে যান ছোটখাট গড়নের এই মানুষটি। তবুও হাসপাতালের বেডে শুয়ে শুয়ে তার হাতে থাকে শিবরাম চক্রবর্তীর হাসির গল্প। খিলখিল করে হাসতে থাকেন তিনি। বলেন, হাসপাতালের রোগীদের নাকি প্রেসক্রিপশনে এরকম একটি হাসির বই যুক্ত করে দেয়া দরকার! চোখ কপালে উঠতে গিয়েও ওঠে না। মিসির আলি বলেছেন? তাই সই! তবে দেয়া হোক এমন একখানা বই।
বালক মিসির আলি তার বাবাকেও নাকানি চুবানি খাইয়েছিলেন প্রশ্নের মাধ্যমে। হতাশ বাবা মাথা নেড়ে বলেছিলেন দুষ্ট প্রশ্ন করা ভালো নয়। শুরুটা কি তাহলে এই দুষ্ট প্রশ্ন থেকেই হয়েছিল মানুষটার?

হুমায়ুন আহমেদ চলে গিয়েছেন আজ অনেকদিন হল। সাথে করে নিয়ে গিয়েছেন অনেকগুলো চরিত্রকে। হিমু, রুপা, হাসান, ফিহা। আর সাথে নিয়ে গিয়েছেন মিসির আলিকে। পুরনো বইগুলোই নতুন করে আবার পড়ি। মোট ২১ খানা উপন্যাস আর একখানা গল্পগ্রন্থ দিয়ে গিয়েছেন আমাদের। মিসির আলিকে পাবার তেষ্টা কি এতে মেটে? মেটে না!
দূর আকাশের তারার দিকে তাকিয়ে হয়ত মিসির আলিকেই খুঁজি বহুবার। যুক্তিনির্ভর এই মানুষটা কি আমার দিকে চেয়ে আছেন? একবারের জন্যও চেয়েছিলেন?

হয়তোবা!

About ahnafratul

লেখালেখি করতে ভালোবাসি। যখন যা সামনে পাই, চোখ বুলিয়ে নেই। চারদিকে তাকাই, উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। দুনিয়াটা খুব ছোট, তারচাইতেও অনেক ছোট আমাদের জীবন। নগদ যা পাই, হাত পেতেই নেয়া উচিত। তাই না?

Check Also

আগাথা ক্রিস্টিঃ যার জীবনটাও ছিল একটা রহস্যে ভরপুর

রহস্য উপন্যাস কিংবা থ্রিলারধর্মী গল্পে যাদের আগ্রহ রয়েছে, আগাথা ক্রিস্টির নাম তাদের কাছে নমস্য। আগাথার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *