কয়েকদিন ধরেই বিভিন্ন নিউজফিডে খেয়াল করলে দেখবেন যে, নতুন ধরণের একটি খেলনা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এটির নাম হচ্ছে ফিজেট স্পিনার। মূলত, এটি একটি বল-বিয়ারিং ধরণের খেলনা এবং এর মাঝখানে ব্যবহারকারীরা আঙুল রেখে একটি সুখানুভূতির আভাস পান। ভারসাম্য ঠিক রেখে খেলনাটি ঘুরতে শুরু করে এবং এটি কোনরকম নেতিবাচক প্রভাব ব্যবহারকারীদের মাঝে ফেলছে না বলে জানা গিয়েছে বিভিন্ন রিপোর্ট থেকে।
ফিজেট স্পিনার তৈরি করা হয়েছিল অটিজমে ভোগা শিশুদের জন্য, অধিকমাত্রায় বিষন্নতা ও উদ্বিগ্নতায় ভুগছে এমন শিশুদের জন্য। বিপুল পরিমাণে চাহিদা বেড়ে যাবার কারণে ফিজেট স্পিনার স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের হাতে হাতে এসে পড়ছে। অনেকে আবার একে বলছেন, অমনোযোগী করবার জন্য নতুন এক ধরণের অস্ত্র শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া হচ্ছে।
তবে আমাদের আজকের আলোচনায় একালের ফিজেট স্পিনার নয় বরং তার চাইতেও অনেক প্রাচীন এক ফিজেট স্পিনারের কথা তুলে ধরব।
ইউনিভার্সিটি অব শিকাগোর অরিয়েন্টাল ইন্সটিটিউটে এক কিউরেটর হঠাৎ একটি অদ্ভুত জিনিস খেয়াল করলেন। প্রায় ৮৫ বছরের একটি ভুল শোধরালেন এই কিউরেটর। ৪০০০ বছরেরও আগের একটি মেসোপটেমিয়ান আর্টিফ্যাক্ট, যেটিকে ৮৫ বছর ধরে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ “স্পিনিং টয়” হিসেবে আখ্যায়িত করে আসছিল। একটি মতামত প্রদানকালে তিনি বলেন যে, আদতে এটি কোন খেলনাই নয়। এটি ছিল একটি অস্ত্র।
মেসোপটেমিয়ার ইজিন লারসা যুগে এই ফিজেট স্পিনার আকৃতির খেলনাটিকে মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ বলে আসছিলেন যে এটি হচ্ছে এমন এক ধরণের খেলনা, যেটি পশুর মাথার খুলির থেকে বানানো। বস্তুটির আকার আকৃতি ও গঠন আজকের দিনের আধুনিক ফিজেট স্পিনারের মতই।
মিউজিয়াম কিউরেটর বলছেন,
“প্রথমে এটিকে দেখতে ফিজেট স্পিনারের মতই লাগছিল। ভালোভাবে খেয়াল করে দেখলাম এটি আসলে তা নয়। আকৃতি অনেক বড় এবং ধারগুলো বেশ চোখা মনে হচ্ছিল; ঠিক যেন শিকারের কাজে ব্যবহার করতে যাওয়া শিকারী এটি তৈরি করেছে। দেখুন, মজার কথা হচ্ছে এতগুলো বছর এর সামনে ছিলাম কিন্তু একটি বারের জন্যও মনে হয় নি খেয়াল করে দেখি।”
কিউরস্টেন নিউম্যান নামক এই কিউরেটর একটি সাক্ষাৎকারে বলেন,
“বস্তুটি মূলত আজকের ইরাকের একটি স্থানে তৈরি করা হয়েছিল। আমরা ধারণা করেছিলাম প্রাচীন তেল আসমারের কোন একটি স্থান, সময়কাল ছিল ২০০০ বি সি থেকে ১৮০০ বি সি। ১৯৩২ সালে রিসার্চ পেপারে যখন এটিকে নিয়ে প্রথম লেখা হয়, তখন এর আবিষ্কারকরা বলেন এটি হয়ত কোন খেলনাসদৃশ বস্তুই হবে।”
ফিজেট স্পিনার নিয়ে উৎসাহের মাত্রাটি একটু কমলে আরিয়েল পারদেস নামক একজন টুইট করে বলেন,
“দেখুন দেখুন! সত্যিকারের আইডিয়া বলতে আসলে কিছুই নেই।”
আজ আর নয়। প্রিয়লেখার সাথেই থাকুন।
(তথ্যসূত্রঃ লাইভ সাইন্স ডট কম)