“ I was Authorised to do everything that I do”-
-Oliver North
Correspondent with the Fox News Channel,
United States Senate candidate,
Former Lieutenant colonel marine corps.
আচ্ছা কেমন হয় ব্ল্যাক অপস – বা ব্ল্যাক অপারেশনগুলো? এগুলো সত্য ঘটনা না কল্প কথা? আসলে প্রশ্ন লুকিয়ে রয়েছে অনেক। কখনো তা জনমনে, কখনো বা তা গোপন নথিতে। হঠাৎ করেই অন্ধকারে সাড়া ফেলে কিছু ছায়া ঘটনা। কিন্তু সত্যি সত্যি কি বাস্তবে অস্তিত্ব রয়েছে এই ব্ল্যাক অপস বা ব্ল্যাক অপারেশনের? তার ইতিকথা শোনাতেই আমাদের আজকের আয়োজন।
Black Op বা Black operation কি:
A Black Op বা Black operation বলতে বুঝায় সরকার কর্তৃক পরিচালিত অতি গোপনীয় মিশন যা হাইলি ক্লাসিফায়েড এবং কোন মতেই জনসম্মুখে প্রকাশযোগ্য নয়। এই ধরণের অতি গোপনীয় মিশন সচরাচর মিলিটারি এজেন্সির এখতিয়ারে পড়ে। তবে বিস্ময়কর হলেও সত্য, কোন কোন সময় বেসরকারী প্রতিষ্ঠান বা মার্সেনারি গ্রুপগুলোও ব্ল্যাক অপারেশন পরিচালনা করে থাকে। এই রকম নামকরা মার্সেনারি গ্ৰুপ গুলোর মধ্যে রয়েছে Academi, Defion Internacional, Aegis Defense Services, Triple Canopy, G4S Secure Solutions ইত্যাদি।
Black operation এর বৈশিষ্ট্য :
যে কোন ব্ল্যাক অপের ৩টি বৈশিষ্ট্য থাকে।
যেমন:- গোপনীয়তা, নেতিবাচকতা ও দায় অস্বীকার করা। ব্ল্যাক অপারেশনগুলোর আরেকটি বৈচিত্র্য রয়েছে তা হচ্ছে, এ ধরণের অপারেশনগুলো সবসময় দু-ধারি তলোয়ারের ন্যায়,অর্থাৎ প্রতারণা ও প্ররোচনার ধোঁয়াশায় মোড়া থাকে। প্রতিটি অপারেশন এমন বিভ্রান্তি দিয়ে পূর্ণ থাকে যে, বেশির ভাগ সময় সুনির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠান অপারেশনের পিছনে যুক্ত থাকলেও তার দায় অন্য কোন প্রতিষ্ঠানের উপর বর্তায়। এফ বি আই, সি আই এ, এম আই সিক্স এই ধরনের অপারেশন পরিচালনায় রীতিমত কুখ্যাত।
সি আই এ পরিচালিত কয়েকটি Black operation:
২০০৭ সালে সি আই এ ১৯৫০-১৯৭০ সালের কিছু ক্ল্যাসিফায়েড কেসের কথা প্রকাশ করে। যার কারন হিসেবে তারা বলে যে অতীতের সি আই এ ও বর্তমান সি আই এ এর অপারেশন মেথডে যে পরিবর্তন এসেছে, তা তুলে ধরাই ক্ল্যাসিফায়েড ইনফর্মেশন প্রকাশের উদ্দেশ্য। এখানে “অপারেশন মকিংবার্ড” নামে একটি ব্ল্যাক অপারেশনের কথা তুলে ধরা হয়েছিলো। এই অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিলো মার্কিন সাংবাদিকদের নিয়োগ দিয়ে সি আই এ’র মুখপাত্র হিসেবে কাজ করানো যেন তারা মার্কিন জনগণের কাছে সি আই এ’র প্রশংসামূলক উদ্যোগসমূহ তুলে ধরে। অপারেশনটির উন্নতির সাথে সাথে এটি বিদেশী প্রচার মাধ্যম এবং রাজনৈতিক প্রচারণাগুলিকে প্রভাবিত করার জন্যও কাজ করেছিল। মিডিয়া সহযোগীদের মধ্যে ছিলো সিবিএস, নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং টাইম ও লাইফ ম্যাগাজিন এর মত পত্রিকা। “অপারেশন নর্থউডস” নামে আরেকটি গোপন ব্ল্যাক অপারেশনের রেকর্ড ছিল, যেখানে ১৯৬০ এর দশকে কেনেডি প্রশাসন কর্তৃক প্রত্যাখ্যাত মিথ্যা পতাকা প্রস্তাবের একটি সিরিজ অন্তর্ভুক্ত ছিল। এই অপারেশনটির মূল পরিকল্পনায় সিআইএ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জুড়ে শহরগুলোতে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলো। মূল পরিকল্পনায় বলা হয়েছিলো যুদ্ধের জন্য জনগণের সমর্থন লাভের উদ্দেশ্যে, ধংসাত্মক ঘটনার পুরো দায় কিউবার উপর চাপানো হবে। জনসমর্থনের দোহাই তুলে আক্রমণ জানানো হবে কিউবার উপর। ১৯৫০ এর দশকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরো একটি প্রকল্প ছিলো MKUltra, যে ব্ল্যাক অপারেশনের উদ্দেশ্য ছিলো মানুষের আচরণগত প্রকৌশল নীরিক্ষা করা। এক কথায় যাকে বলে ব্রেইন ওয়াশ। এখানে মানুষের মানসিক অবস্থার পরিবর্তনে রাসায়নিক ও মনোস্তাত্ত্বিক চাপের প্রয়োগ ঘটিয়ে তাদের মস্তিষ্কের ফাংশনগুলোর পরিবর্তন করে অবৈধ ও অমানবিক পরীক্ষা চালানো হয়েছিলো । প্রকল্পের তত্ত্বাবধানে এবং পরিচালনায় সম্পূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলো সিআইএ। ২০০৭ সালে প্রকাশিত আরেকটি কভার্ট অপারেশন এর নাম ছিলো “পেপার ক্লিপ”।
সি আই এ’র টপ Assassin এডওয়ার্ড স্নোডেন :
স্বাগতম জানাই এবার গুপ্ত হত্যার খেলায়। বহুল আলোচিত সমালোচিত এডওয়ার্ড জোসেফ স্নোডেনকে নিয়েই বলা যাক। শুরু হোক তার উক্তি দিয়েই-
“I don’t want to live in a world where everything I say, everything I do, everyone I talk to, every expression of creativity and love or friendship is recorded.”
- Edward Joseph Snowden
যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার চাঞ্চল্যকর এক ঘটনার নায়ক এডওয়ার্ড স্নোডেন- গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক এক কম্পিউটার বিশেষজ্ঞ তিনি।তিনি ফাঁস করে দিয়েছিলেন যে প্রিজম কর্মসূচির আওতায় ফেসবুক, গুগল, মাইক্রোসফট, ইয়াহু, ইউটিউব এবং অ্যাপলসহ বিভিন্ন ইন্টারনেট জায়ান্ট প্রতিষ্ঠানকে না জানিয়েই তাদের সার্ভারে সরাসরি প্রবেশ করে তথ্য সংগ্রহ করে আমেরিকার ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সি (এনএসআই) ও ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)। স্নোডেনকে নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিলো যা এখনো বর্তমান। তাকে বলা হয়েছে একজন বীর, গোপন তথ্য ফাঁসকারী, ভিন্নমতাবলম্বী, বিশ্বাসঘাতক এবং দেশপ্রেমিক। স্নোডেন তাঁর কার্যকলাপ সম্বন্ধে বলেছেন যে তিনি যা করেছেন মার্কিন জনগণের সপক্ষে, জনগণের বিরুদ্ধে এবং তাদের নামে গোপনে যেসব করা হচ্ছে তা জনসাধারণকে অবহিত করা একটি নৈতিক দায়িত্ব। অনেক মার্কিন কর্মকর্তা স্নোডেনের কার্যকলাপকে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ব্যাপক ক্ষতি হিসেবে অভিহিত করেছে, অন্যদিকে অনেকে আবার তাঁর এসব কার্যকলাপকে সাধুবাদ জানিয়েছে। এদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার।
সাবেক সিআইএ প্রধান জন ব্রেনান স্নোডেনকে সিআইএ’র প্রথম সারির গুপ্ত ঘাতক বলে উল্লেখ করেছেন। মার্কিন সামরিক বাহিনী হতে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত স্নোডেন তার মিশন পূরণ করার ক্ষেত্রে যত গুলো ই-মেইল তার সুপেরিয়রদের পাঠিয়েছিলো তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা হয়েছিলো।
ব্রেনানের ভাষ্য মতে,-“স্নোডেন আমাদের সবচেয়ে মারাত্মক এজেন্ট ছিলো। দিনে সে সিস্টেম অ্যাডমিনিস্ট্রেটর হিসেবে কাজ করলেও, রাতে ‘এজেন্ট কউচারি’ হিসাবে তিনি ডিপার্টমেন্টে্র বিভিন্ন মিশনে অংশ নিতো, সে আমাদের গোপন এমডি -5 প্রোগ্রামের অংশ ছিলো।
ব্রেনান স্নোডেন সম্পর্কে আরও বলেন,’ স্নোডেনকে ২০০৪ সালে সিআইএ তে রিক্রুট করা হয়েছিলো। তখন সে মাত্র ন্যাশনাল গার্ড এর ট্রেনিং শেষ করেছে, প্রাথমিক ভাবে তাকে স্পেশ্যাল ফোর্স এর জন্য সিলেক্ট করা হয়। স্নোডেন এর
বেষ্ট এজেন্ট হওয়ার পিছে অনেকগুলো প্রচ্ছন্ন গুণ ও ট্রেনিং এর সমন্বয় রয়েছে। সে স্প্যানিশ সহ অনর্গল ২৫টি ভাষায় কথা বলতে পারে। সে যে বিষয় গুলোয় হাইলি ট্রেইন্ড তার মধ্যে রয়েছেঃ- ডাইভিং ,প্যারাশুটিং , হাইস্পিড ড্রাইভিং , জেট প্যাক ফ্লাইং, ব্যাকারাট ,নিউক্লিয়ার বিষ্ফোরক ও অস্ত্র নিষ্ক্রিয়করণ। তার ফাইলে ওসামা বিন লাদেনের হত্যা সহ ৩৫২ জনের নিশ্চিত মৃত্যুর সাথে সম্পৃক্ত থাকার রেকর্ড লিপিবদ্ধ রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তুতকৃত এমন এক এজেন্ট কেন আজ রাশিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়ে রয়েছে এই ব্যাপারে সাবেক সিআইএ প্রধান স্পষ্ট কোন কারণ উল্লেখ করেন নি।
নিশ্চয়ই জানতে ইচ্ছে করছে স্নোডেন এখন কোথায় কি করছেন? জানতে চাইলে চোখ রাখুন প্রিয়লেখার পেইজে। এমনই চমকপ্রদ আরও বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে আমরা হাজির হব আপনার সামনে।