ধরুন, রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। ফোনে একটি কল এল। কথা বলতে বলতে কোনোদিকে না তাকিয়েই হেঁটে যাচ্ছেন একমনে। এমন সময় একটি ট্রাক আপনার সামনে দিয়ে দুরন্ত গতিতে ছুটে এল। কী করবেন ভেবে পাচ্ছেন না। হঠাৎ একজন লোক এসে ঝাঁপিয়ে পড়ে উদ্ধার করল আপনাকে। ঠিক কয়েকদিন পর ঐ একই ব্যক্তিকে আপনি উদ্ধার করলেন ঠিক একই জায়গায়, একই পরিস্থিতিতে, একই সময়ে। একে কী বলবেন? কাকতালীয় কোনো ঘটনা? সত্যিই, স্রষ্টার এই অপার পৃথিবীতে কত কিছুই না ঘটে আমাদের সাথে। ঘটনাগুলো দেখে শুনে আমরা হই বিস্মিত, ভীত কিংবা কৌতূহলী। আসুন, আজ এমনই কিছু কাকতালীয় ঘটনা সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক এই আয়োজনেঃ
হুভারের বাঁধ প্রকল্পে মৃত্যুবরণ করেন মোট ১১২ জন হতভাগ্য। এদের মাঝে প্রথমে যিনি মারা গিয়েছিলেন, তার নাম জে জি টিয়ারনি। সময়তা ছিল ১৯২২ সালের ডিসেম্বরের ২০ তারিখ। সর্বশেষ যে ব্যক্তিটি মারা যান, তার মৃত্যুর সময়কাল ছিল ১৯৩৫ সালের ডিসেম্বরের ২০ তারিখ। একই দিনে যিনি মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তিনি কে জানেন?আর কেউ নয়, জে জি টিয়ারনির ছেলে প্যাট্রিক টিয়ারনি!
১৯৩০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ডেট্রয়েটে অসাবধানতাবশত এক গৃহিণীর সন্তান খেলতে খেলতে জানলা দিয়ে পড়ে যায়। ভাগ্যিস, নিচে হেঁটে যাচ্ছিলেন জোসেফ ফিগলক নামক এক ব্যক্তি। তিনি বাচ্চাটিকে ধরে ফেলেন। দুজনই ছিলেন অক্ষত।ঠিক এক বছর পর ঐ জানলা দিয়ে একই গৃহিণীর সন্তান আবারও খেলতে খেলতে পড়ে যায় (মহিলা হয়ত খুবই অসাবধান ছিলেন। তা না হলে বারংবার এমন কিছু ঘটে কীভাবে?) এবারও তার সন্তানকে উদ্ধার করে এক পথচারী। জানতে চান তিনি কে? এক বছর আগের উদ্ধারকারী জোসেফ ফিগলক! বলাবাহুল্য, এবারও ফিগলক ও শিশু উভয়েই অক্ষত ছিলেন।
সংখ্যাতত্ত্বে যারা অতিমাত্রায় বিশ্বাস করেন, তাদের অনেকেরই ধারণা যে ৬৬৬ হচ্ছে শয়তানের সংখ্যা। এমনকি জাপানে এই সংখ্যাকে অত্যন্ত ভয়ের চোখে দেখা হয়। ২০০৮ সালে বারাক ওবামা যখন প্রেসিডেনশিয়াল ইলেকশনে জয়লাভ করেন, তখন ইলিনয়ে একটি লটারী টিকিটের ড্র অনুষ্ঠিত হয়। জানতে চান প্রথম পুরস্কার বিজয়ীর নম্বর কত ছিল? ৬৬৬!
১৯৭২ সালে বারমুডায় একটি ট্যাক্সি ছোট একটি বাইকের আরোহীকে ধাক্কা দেয়। এই ধাক্কার ফলে আরোহীর মৃত্যু ঘটে। ঠিক একবছর পরে মৃত ব্যক্তির ভাই ঐ একই বাইকে আরোহণ করেন। তার মৃত্যুও ঠিক একই জায়গায় ঘটে। বিস্ময়ের বিষয় হচ্ছে, তার সাথেও ঠিক একই ট্যাক্সির সংঘর্ষ ঘটে এবং গতবার সে ট্যাক্সিতে যে যাত্রী ছিলেন, এবারও ঠিক একই যাত্রী!
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে সর্বপ্রথম ও সর্বশেষ যে দুজন সৈনিক মৃত্যুবরণ করেছিলেন, তাদের যে সমাধিতে কবর দেয়া হয়েছে তার দূরত্ব মাত্র ৭ গজ। দুই বীর সৈনিকের কবরই মুখোমুখি অবস্থানে। খোঁজ করলে জানা যায়, এই সমাধি স্থাপনের সাথে তাদের পরিচয়ের কোনো যোগসূত্র নেই। নেহাত কাকতালীয় ভাবে মুখোমুখি শায়িত আছেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধের এই দুই বীর সেনানী।
১৯৮৫ সালে ওহাইয়োতে মাত্র দুটি গাড়ির বিচরণ ছিল। অদ্ভুত হলেও সত্য, এই দুটো গাড়িই পরস্পরের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষে বিনষ্ট হয়।
ড্যানি ডু টয়েত মাত্র ৪৯ বছরে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুটা যেন তারই কথার প্রতিফলন হয়ে ছিল। একটি সেমিনারে তিনি বক্তব্য দেন যে মানুষের মৃত্যু যে কোনো সময়েই হতে পারে। মৃত্যু কখনও বলে কয়ে আসে না। এই কথা বলার পরই তিনি আসনে বসে পড়েন এবং একটি পিপারমিন্ট ক্যান্ডি চিবুতে শুরু করেন। আকস্মিকভাবে ক্যান্ডিটি তার গলায় আটকে যায় ও দম বন্ধ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
(তথ্যসূত্রঃ ক্র্যাকড ডট কম)