ঘুম মানুষের জন্য অতি প্রয়োজনীয় একটি বিশ্রামের উপাদান। কিন্তু ঘুমের ফলেও অহরহ মানুষকে নানা ধরণের বিপাকে পড়তে হয়। ঘটতে পারে নানা ধরণের দূর্ঘটনা ও উদ্ভব হয় নানা ধরণের রোগের। এর আগের তিন পর্বে আপনাদের দেয়া হয়েছিল ঘুমের মাঝে বা ঘুমকে নিয়ে মানুষের কি কি ধরণের রোগ হতে পারে। আজ দেয়া হল এর চতুর্থ ও শেষ পর্বঃ
৭) স্লিপ প্যারালাইসিসঃ
আমাদের যখন আর ই এম ঘুম বা র্যাপিড আই মুভমেন্ট ঘুম হয়ে থাকে, তখন কার্যকরী যে পেশি রয়েছে তা নিস্তেজ হয়ে যায়। কিন্তু নিস্তেজ হয়ে যাবার ফলে এই পেশিগুলোর ওপর আমাদের আর কোন নিয়ন্ত্রণ থাকে না। তখন এক ধরণের পক্ষাঘাতে আমরা আচ্ছন্ন হয়ে যাই এবং এটি আমাদের ঘুমের মাঝে নানা ধরণের কাজে লিপ্ত হয়ে যায়, যা আমাদের স্বাভাবিক বোধের মাঝে করা হয় না। মাঝে মাঝে আমরা নিজেদের আঘাতও করে বসি। মাঝে মাঝে ব্যক্তি ঘুম থেকে উঠে যান এবং নিজেকে আটকে রাখতে চান কোন ধরণের অঘটন থেকে। চাইলেও তিনি নিজেকে রোধ করতে পারেন না। অঘটন ঘটে যায় এবং এর নামই হচ্ছে স্লিপ প্যারালাইসিস।
সানফ্রান্সিস্কোর একটি গবেষণায় বলা হয়েছে যে, ৭৫ শতাংশ মানুষ জীবনের কোন না কোন একটি সময়ে এই স্লিপ প্যারালাইসিসের দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকেন। অনেক দেশে এটির নানা ধরণের নাম রয়েছে। যেমন চীনে এটিকে বলা হয়ে থাকে অল্ড হ্যাগ, মেক্সিকোতে বলা হয় সুবারসি এল মুয়ের্তো, আমাদের দেশে আমরা এটিকে “বোবা ভূত” বা “বোবা জ্বিন”-এর নামে আখ্যায়িত করে থাকি।
৮) আর ই এম বিহেভিয়ার ডিজঅর্ডারঃ
আগের কথাতেই জেনেছি স্লিপ প্যারালাইসিসে মানুষের করার খুব বেশি একটা কিছু থাকে না। কিন্তু আর ই এম বিহেভিয়ার ডিজঅর্ডার যেন এর পরের ধাপ। ক্লাইনের মতে, এই সময় মানুষ নিজের স্বপ্নের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করা শুরু করে দেয়। এক্ষেত্রে কোন কোন সময় তারা আক্রমণাত্মক হয়ে উঠেন। যেমন, দেয়ালে ঘুষি মারা কিংবা পাশের ব্যক্তিকে আঘাত করে বসা। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ঘুম থেকে উঠবার পর আক্রান্ত ব্যক্তির এসব কিছুই মনে থাকে না। তিনি শুধুমাত্র আবছাভাবে স্বপ্নের কথা মনে করতে পারেন।
আর ই এম ডিজঅর্ডার সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের মাঝে হয়ে থাকে। এটি পারকিনসন ডিজিজের একটি সিম্পটম হতে পারে বলেও জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। ডাক্তাররা সাধারণত এই রোগের উপশম হিসেবে মেডিকেশন করার প্রচেষ্টা করতে বলেন রোগীদের।
আজ আর নয়। প্রিয়লেখার সাথেই থাকুন, সকলের প্রিয় হয়ে থাকুন।