এমনিতেই টুর্নামেন্টে এসেছিল ৮ দলের মধ্যে অষ্টম হয়ে, তারপরে প্রথম ম্যাচে ভারতের কাছে একতরফা ভাবে পরাজয়। টুর্নামেন্টে পাকিস্তানের দৌড় গ্রুপ পর্ব পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ভেবে নিয়েছিলেন অনেকে। সবাইকে ভুল প্রমাণ করে সেই ভারতকে উড়িয়ে দিয়েই নিজেদের প্রথম চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির শিরোপা জিতেছে পাকিস্তান। আর সেই শিরোপা জয়ের পথে সবচেয়ে বড় অবদান রেখেছেন যিনি, তিনি হাসান আলী। ৫ ম্যাচে ১৩ উইকেট শিকার করা হাসান হয়ে গেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া বোলার।
এই টুর্নামেন্টে খেলতে আসার আগে হাসান আলীর ক্যারিয়ার তেমন আহামরি কিছু ছিল না। ২০১৬ সালে ওয়ানডে অভিষেক হওয়া হাসান চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি শুরুর আগে ১৬ ম্যাচ খেলে পেয়েছিলেন ২৯ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে একমাত্র টেস্টে পেয়েছেন ৩ উইকেট। হাসান আলীর পক্ষে বাজি ধরার লোক তাই খুব একটা ছিল না। সবাই বরং মেতে ছিলেন কাগিসো রাবাদা, মিচেল স্টার্ক, ট্রেন্ট বোল্টদের নিয়ে। কিন্তু এবারের আসরের সারপ্রাইজ প্যাকেজ হিসেবে আবির্ভূত হলেন কিনা হাসান আলী!
প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে পেলেন মাত্র ১ উইকেট, পাকিস্তানও হারে শোচনীয়ভাবে। এরপর থেকেই বদলে গেলেন হাসান, বদলে গেল পাকিস্তানও। সাউথ আফ্রিকা, শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ডের পর ফাইনালে ভারতের সাথে, টানা ৪ ম্যাচে পেয়েছেন ৩ টি করে উইকেট। তার চেয়েও বড় কথা, এই চার ম্যাচে হাসানের উপর প্রাধান্য বিস্তার করতে পারেনি কোন ব্যাটসম্যানই।
৫ ম্যাচে ৪৪ ওভার বল করে মাত্র ১৯১ রানের বিনিময়ে পেয়েছেন ১৩ উইকেট। ইকোনমি, এভারেজও ঈর্ষণীয়। প্রতি উইকেট পেতে গড়ে খরচ করতে হয়েছে মাত্র ১৪.৬৯ রান, গড়ে প্রতি ২১ বলে নিয়েছেন একটি করে উইকেট। ওভার প্রতি রান খরচ করেছেন মাত্র ৪.২৯ করে।
আর এমন আকর্ষণীয় পারফরম্যান্স দিয়েই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট পাওয়া বোলার হয়ে গেছেন হাসান, পেছনে ফেলেছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জেরোম টেইলরকে। ২০০৬ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে টেইলরও অবশ্য হাসানের সমান ১৩ উইকেটই পেয়েছিলেন, কিন্তু এভারেজ, ইকোনমি, স্ট্রাইক রেট সবকিছুতেই এগিয়ে হাসান আলী।
১২ উইকেট নিয়ে তালিকার ৩য় ও ৪র্থ স্থানে আছেন ভারতের রবীন্দ্র জাদেজা ও শ্রীলঙ্কার ফারভিজ মাহাবুব। গত আসরে এই ইংল্যান্ডেই ভারতের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ের পথে ১২ উইকেট নিয়ে বড় অবদান রেখেছিলেন জাদেজা। আর মাহাবুব ১২ উইকেট পেয়েছিলেন ২০০৬ আসরে।
১১ উইকেট করে পেয়েছেন ৪ জন বোলার। গত আসরে নিউজিল্যান্ডের মিচেল ম্যাকলেনাঘান ও ইংল্যান্ডের জেমস অ্যান্ডারসন, ২০০৯ আসরে সাউথ আফ্রিকার ওয়েইন পারনেল ও ২০০৬ আসরে শ্রীলঙ্কার লাসিথ মালিঙ্গা।
এক আসরে সবচেয়ে বেশি উইকেট শিকারি
নাম | ম্যাচ | উইকেট | এভারেজ | স্ট্রাইক রেট | ইকোনমি | সেরা বোলিং |
হাসান আলী | ০৫ | ১৩ | ১৪.৬৯ | ২০.৫ | ৪.২৯ | ৩/১৯ |
জেরোম টেইলর | ০৭ | ১৩ | ২২.০৭ | ২৬.৩ | ৫.০৩ | ৪/৪৯ |
রবীন্দ্র জাদেজা | ০৫ | ১২ | ১২.৮৩ | ২০.৫ | ৩.৭৫ | ৫/৩৬ |
ফারভিজ মাহারুফ | ০৬ | ১২ | ১৫.৮৩ | ১৮.০০ | ৫.২৭ | ৬/১৪ |
মিচেল ম্যাকলেনাঘান | ০৩ | ১১ | ১৩.০৯ | ১৩.০০ | ৬.০৪ | ৪/৪৩ |
.